ভুল করে গরুর মাংস খেলে কি হয়??

ভুল করে গরুর মাংস খেলে কি হয়??


মুসলমানরা মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলে হিন্দুদের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারিত করে গরুর মাংস খাইয়ে দেয়। সে মুসলমান সাধারণ ব্যক্তি হোক বা বিসিএস ক্যাডার বা শিক্ষক বা লেখক সাহিত্যিক যেই হোক না কেন, হিন্দুবিদ্বেষমুলক কার্যক্রমে কেউ কম যায় না। তো যেহেতু অন্যদের মত হিন্দুরা পরধর্ম বা পরসংস্কৃতিবিদ্বেষী ট্রেনিং পায় না, সেহেতু তারা চট করে তার পাশে থাকা মুসলমানকে অবিশ্বাস বা সন্দেহ করে না। শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে মুসলমানরা হিন্দুদের এই সরলতার সুযোগ নিয়ে গরুর মাংস বা ঝোল খাইয়ে দেয়। আর তারপর স্বমূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে বলে তুমি তো গরুর মাংস খেয়েছ, তুমি তো আর  হিন্দু নেই, তোমার হিন্দুত্ব শেষ হয়ে গেছে। তুমি এবার মুসলমান হয়ে যাও। অনেকটা লেজ কাটা শিয়ালের মত আর কি। নিজের লেজ কাটা গেছে, অতএব বাকীদেরও ক্ষতি করতে হবে, ছলে বলে কৌশলে যেভাবে হোক না কেন। এরকম অবস্থায় একজন হিন্দুর করণীয় কি?


বিধর্মীদের প্রশ্ন: ভুল করে গরুর মাংস খেলে তোমরা মুসলিম হয়ে যাও না ? কিংবা আমরা যদি জোর করে গরুর মাংস খাওয়াই তাহলে তোমরা মুসলিম হয়ে যাবা না ?

আমাদের উত্তর: না। গরুর মাংস আহার করলেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না। জোরপূর্বক খাওয়ালেও কেউ মুসলিম হয় না। তবে অবশ্যই এটি বেদ বিরুদ্ধ একটি কর্ম। হিন্দু বা মুসলিম হওয়াটা খাদ্যের মধ্য সীমাবদ্ধ নয়। আপনি কোন সংস্কার ধারণ করেছেন, কোন ধর্মমত ধারণ করেছেন, কোন নামের সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ইত্যাদি হাজারটা ইস্যু নিয়ে ধর্মচ্যুত হয়। সুতরাং গরুর মাংস খেয়ে নিলেই কেউ মুসলিম হয়ে যাবে সেই ভাবনাটাই ভুল। তবে ভুল করেও মাংস খেলে সেটি  অপরাধ হিসাবেই গণ্য হয়। যেকোনো জীবকে হত্যা করে খাওয়াই অপরাধ। ভুল করে আগুনে হাত দিলে আগুন আপনাকে ক্ষমা করবে না। অবশ্যই হাত পুড়ে যাবে। আপনার ভুলের জন্য আগুন আপনাকে ক্ষমা করবেনা। কিন্তু আমরা এই পুড়ে যাওয়া হাতের পরিচর্যা আমরা করতে পারি। তাহলে অবশ্যই হাত সুস্থ হয়ে যাবে।

যেহেতু গরু একটি গৃহপালিত পশু এবং আমাদের ধর্মে এই প্রাণীকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তাই আমরা এটিকে হত্যা করে মাংস আহার করিনা। আর বেদেও গো-হত্যার বিষয়ে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু গরুর মাংস খেয়ে নিলেই কেউ মুসলিম হয়ে যাবে - এই তথ্য আপনি কোথায় পেলেন ?

কেউ যদি ভুল করে গরুর মাংস আহার করে বা অন্য কেউ জোরপূর্বক খাওয়ায় তাহলে পাপ অবশ্যই হবে।  কিন্তু পাপ করার পর সেই পাপ থেকে যদি অনুশোচনা জন্ম নেয় আর এই অনুশোচনা থেকে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয় এবং একই ভুল পুনরায় না করার প্রতিজ্ঞা করা হয়, তাহলে নিশ্চই ঈশ্বর কৃপা করে এই পাপ থেকে মুক্ত করে দেন। শুধু গো-মাংস খাওয়াই নয়, যেকোন পাপের ক্ষেত্রেই এই বক্তব্য প্রযোজ্য।

আর মনের শান্তির জন্য শুদ্ধিযজ্ঞ, দেবযজ্ঞ ইত্যাদি যজ্ঞাদি কর্ম করতে হয়। ঈশ্বর পরম দয়ালু, তিনি নিশ্চই ক্ষমা করে দেন। গরুর মাংস খেয়ে নিলেই ঈশ্বর কাউকে মুসলিম বানিয়ে দেন না।

©শাস্ত্রপৃষ্ঠা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ