প্রকাশ: ১২:৩১ pm ১১-০৯-২০২২ হালনাগাদ: ১২:৩১ pm ১১-০৯-২০২২, এইবেলা ডেস্ক
পাকিস্তানে মন্দিরই হলো বন্যার্ত মুসলিমদের আশ্রয়স্থল
পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডব অব্যাহত। দেশটিতে বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ।
দেশটির এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্যায় পাকিস্তানের এক তৃতীয়াংশ ডুবে গেছে। তেমনি বেলুচিস্তানের কাছি নামের একটি জেলা। ওই জেলার জালাল খান নামে ছোট্ট গ্রামটি এখনও বন্যার কবলে। ইতোমধ্যে গ্রামটির ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নারি, বোলান ও লেহরি নদী প্লাবিত হওয়ার কারণে গ্রামটি প্রদেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নিজের জীবন বাঁচাতে এসময় গ্রামটির মানুষ প্রাণপণে লড়ে। এই সময় এগিয়ে আসে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। বন্যা কবলিত লোকদের ও তাদের গবাদি পশুর জন্য 'বাবা মাধোদাস মন্দিরের' দুয়ার খুলে দেয়।
স্থানীয়দের মতে, বাবা মাধোদাস ছিলেন বাদেশভাগের পূর্ববর্তী একজন হিন্দু দরবেশ। যাকে এলাকার মুসলমান ও হিন্দুরা সমানভাবে ভালবাসতেন। ইলতাফ বুজদার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, বাবা মাধোদাস উটে চড়ে ভ্রমণ করতেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জালাল খানের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ লোক কর্মসংস্থান ও অন্যান্য সুযোগের জন্য কাছির অন্যান্য শহরে চলে গেছে। কিন্তু কিছু পরিবার মন্দিরের দেখাশোনা করতে এর প্রাঙ্গণে রয়েছে।
ভাগ নারি তহসিলের দোকানদার রতন কুমার (৫৫) বর্তমানে এই মন্দিরের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি ডনকে বলেন, মন্দিরে ১০০ এর বেশি রুম আছে। প্রতিবছর বেলুচিস্তান ও সিন্ধু থেকে বহুসংখ্যক লোক তীর্থযাত্রার জন্য আসে।
রতন কুমারের ছেলে শাওন কুমার ডনকে বলেন, এমন নয় যে এবারে এই মন্দির অস্বাভাবিক বৃষ্টির কবলে পড়েনি। এতে কিছু রুম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিন্তু সামগ্রিক কাঠামো নিরাপদ আছে। অন্তত ২০০-৩০০ লোক, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান এবং তাদের গবাদি পশুকেও মন্দিরে আশ্রয় দেওয়া হয়। তাদের দেখাশোনা করেন হিন্দু পরিবারের সদস্যরা।
খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এলাকাটি জেলার বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল। আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা বলেন, তাদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে রেশন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার পরে, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের খাওয়ায়।
ইসরার মুগেরি যিনি জালাল খানের একজন চিকিৎসক। সেখানে আসার পর থেকেই তিনি মন্দিরের ভেতরে একটি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করেন।
ডনকে তিনি বলেন, স্থানীয়দের পাশাপাশি হিন্দুরা অন্যান্য গৃহপালিত পশুর সঙ্গে ছাগল ও ভেড়াকেও আশ্রয় দেয়। এই চিকিৎসক আরও বলেন, স্থানীয় হিন্দুরা লাউডস্পিকারে করে মুসলমানদের আশ্রয় নিতে মন্দিরে ছুটে আসার আহ্বান জানান।
Source: Eibela
0 মন্তব্যসমূহ