মুসলিম হোম টিউটর ও বিবাহে মুসলিম ফটোগ্রাফার প্রসঙ্গে সতর্কতা - তুষার কান্তি সরকার

মুসলিম হোম টিউটর ও বিবাহে মুসলিম ফটোগ্রাফার প্রসঙ্গে সতর্কতা - তুষার কান্তি সরকার

ধর্মীয় গ্রুপ গুলোতে দুটো পোষ্ট ভেসে বেড়াচ্ছে। 


  • ১। মুসলিম হোম টিউটর রাখবেন না।
  • ২। বিবাহে মুসলিম ফটোগ্রাফার রাখবেন না।


এই দুই নির্দেশনার বিপক্ষে অনেক মানুষের নানারকম যুক্তি দেখলাম। অনেকে বলছেন, হিন্দুত্ববাদী গ্রুপগুলো মোল্লা টাইপের হয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি। 


এ ব্যাপারে আমি দু'একটা কথা বলার প্রয়োজন মনে করি। 


আমাদের প্রায় ৯৯% হিন্দুই ছোটবেলা থেকে এই শিক্ষা পেয়ে বড় হয় যে, সকল ধর্মই সমান এবং সবাইকেই শ্রদ্ধার চোখে দেখবে। কিন্তু যখন সে বড় হতে থাকে তখন পর্যায়ক্রমে সে বুঝতে পারে সে যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বড় হয়েছে সেটা আশেপাশের অধিকাংশ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নাই। বিশেষ করে বাংলাদেশে ৫% হিন্দু মানুষও পাওয়া যাবে না যাদের মুসলিম বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে হিন্দুধর্ম নিয়ে বিদ্রুপ মন্তব্য শোনেনি। এরকম অবস্থায় প্রতিটা হিন্দু অসহায়ের মতো হেসে উড়িয়ে দিয়েছে অথবা এড়িয়ে গেছে। কারণ, উত্তর দেওয়ার মতো ধর্মীয় জ্ঞান তার ছিল না অথবা পরিবেশের প্রভাবে সে উত্তর দিতে ভয় পেয়েছে। 


এই যে হিন্দু সমাজের নাজেহাল অবস্থা, পাল্টা উত্তর দিতে না পারার ব্যর্থতা, মুখ বন্ধ করে অন্যায় সহ্য করা, এসব ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। মুসলিম বন্ধুটিকে হেসে হেসেই হিন্দুধর্মের সত্যিটা জানিয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা এখন আমরা দেখতে পাই। এই  যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেটা কিন্তু হিন্দুত্ববাদী ছেলেমেয়েদের জন্যই। মন্দিরের আচার্যের কাছে ধর্ম শিক্ষা নেওয়া হয় মুক্তির সাধনার জন্য, অধিকাংশ আচার্য কখনোই বাস্তবধর্মী এই পরিবর্তনের চেষ্টা করেনি। এই সমাজে সত্য বলে টিকে থাকার লড়াইটা কখনোই মন্দির ভিত্তিক শিক্ষাক্রম থেকে পাওয়া যায় না। অবশ্য মুক্তির সাধনায় এসব শিক্ষা মানায় না৷ 


যাইহোক, এই কথাগুলো কেন বললাম? বলছি এই জন্য যে, কোনো একটি অনুরোধমূলক পোষ্ট আপনার খারাপ লাগতে পারে, মনে হতে পারে সমাজের জন্য এসব অনুরোধ উচিত না, বিষবাষ্প ছড়িয়ে সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি করা উচিত না, তাহলে সেটা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলুন। মনে রাখবেন, যখন সাম্প্রদায়িক বিপদ আসে তখন হিন্দুত্ববাদের ছেলেপেলেরাই রাস্তায় আসে। আর যারা ঘরে বসে শান্তির জ্ঞান দেয়, সম্প্রীতির কথা বলে, তারা কখনোই আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে না।


এবার মূল প্রসঙ্গে দুটো কথা। প্রথমেই বলা হয়েছে মুসলিম হোম টিউটর রাখবেন না। এটা বলার কারণ কী? কারণ হচ্ছে দিন দিন এই দেশে মৌলবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার সন্তানকে হিন্দুধর্মবিমুখ করা এবং ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য অনেক ধরণের জ্ঞান সেই গৃহশিক্ষক আপনার সন্তানকে দিবে। যদিও এখন পর্যন্ত এই হারটা কম, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি যেটা হয় সেটা হলো কোনো না কোনো ভাবে ইসলামের সৌন্দর্যটা সেই গৃহশিক্ষক প্রদান করবেই। এদিকে আমদের মা-বাবারা সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপার সম্পূর্ণ উদাসীন থাকে। এর একটা কারণ হলো মা-বাবাদের নিজেদেরই ধর্ম নিয়ে তেমন কোনো জ্ঞান রাখে না এবং ধর্ম পালনও করে না। মায়েরা সন্ধ্যা হলে ধূপ দেয় আর পরিবার নিয়ে সপ্তাহে একদিন নিরামিষ খাওয়া, ইচ্ছা হলে কোনো বিশেষ দিনে গীতার কিছু শ্লোক পড়ে, এই হলো আমাদের ধর্মীয় জ্ঞান। যখন সন্তান বড় হবে তখন যদি সে কোনো ধুরন্দর মোল্লা বন্ধুর পাল্লায় পড়ে তাহলে নিশ্চিতভাবেই সেই সন্তান কনভার্ট হয়। কেন? কারণ ছোটবেলা থেকেই ইসলামের সৌন্দর্যের শিক্ষা এবং নিজ ধর্মপালনের যে অসারতা সেটা সে উপলব্ধি করতে পারে৷ এধরণের বহু ঘটনার বাস্তব সাক্ষী আমি। সুতরাং আমার মতে হোম টিউটর অবশ্যই হিন্দু রাখার চেষ্টা করাই শ্রেয়।


এর পরে বলা হয়েছে বিবাহে মুসলিম ফটোগ্রাফার রাখবেন না। এটাতে আমার কিঞ্চিৎ দ্বিমত আছে। আসলে ফটোগ্রাফার হিন্দুদের মধ্যেও খারাপ আছে আবার মুসলিমদের মধ্যেও খারাপ আছে। সাধারণত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে খারাপ উদ্দেশ্যে কিছু করে না।  কিন্তু একদমই যে খারাপ কিছু হয় না, তা কিন্তু নয়। বেশ কিছু ঘটনা এমন হয়েছে, ছবি বা ভিডিয়ো এডিট করে মাথামুণ্ডু চেঞ্জ করে সোস্যাল মিডিয়ার ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা এই সোসাইটির আছে। সুতরাং সতর্ক থাকা শ্রেয়। আর হিন্দু ফটোগ্রাফার প্রমোট করার আরেকটি কারণ হলো, নিজ সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে একটু সাহায্য করা।


শেষ কথা... 


এসব পোষ্ট আপনার এবং আপনার পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবেই হিন্দু গ্রুপগুলোতে দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত তো সর্বদা আপনিই নিবেন। সুতরাং ভুক্তভোগী হলেও আপনিই হবেন। ধন্যবাদ।


Tusar Kanti Sarkar

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ