বৈদিক সনাতনধর্মে প্রত্যাবর্তন

বৈদিক সনাতনধর্মে প্রত্যাবর্তন

....তখন বিশেষ ধর্মের দিকে আর্কষিত হয়েছিলাম। ব্রেইন ওয়াশের ফলে মনে করেছিলাম এটি সত্য। বড় হয়ে তা গ্রহণ করব। মা-বাবার মনে কষ্ট দিয়েও....


🕉 শাস্ত্রপৃষ্ঠা গ্রুপে হয়ত আমিই সর্বকনিষ্ঠ (এটি আমার মার আইডি )। বর্তমানে আমার বয়স ১৫।কিশোরগঞ্জে থাকি, নাম অর্পণ রায়।


পড়াশোনায় সবসময় প্রথম সারির ছাত্র ছিলাম। তৃতীয়  শ্রেণিতে ধর্ম বই হাতে পাই। ছোটবেলা হতেই ধর্মের প্রতি এক অজানা আকর্ষণ ছিল। সবসবই ধর্মীয়  উপদেশগুলো মানার চেষ্টা করতাম। ৩য় শ্রেণি হতেই একাদশী, মহাপুরুষদের জন্ম-মৃত্যু তিথি, বিশেষ পূজা পার্বণে উপবাস থাকতাম। বাড়িতে কিছু ধর্মীয় বইও ছিল। কিন্তু এগুলোর মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝা যেত না। যেমন: শ্রীমদ্ভাগবদগীতা (আনন্দ পাবলিশার্স), পাঁচালী, ব্রতকথা এই টাইপের বই ছিল। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীতে ধর্মবইয়ে রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ ও সারদা দেবীর জীবনী পাই। তাদের জীবন সম্পর্কে আরো বিশদভাবে জানতে উদ্বোধন কার্যালয় হতে তাদের তিনজনের জীবনী কিনে পড়ে ফেলি। সেই সময় তাদের ভাবধারায় কিছুটা প্রভাবিত ছিলাম। কারণ, তাদের সর্বধর্ম সমন্বয়। সব ধর্ম সমান সত্য। সব ধর্মের মূল লক্ষ্য সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া।


কিন্তু তাদের প্রভাব বেশি দিন থাকে না। কারণ, তাদের সর্বধর্ম সমন্বয়ই। চিন্তা করে ভেবে দেখলাম যে, সব ধর্ম সমান হলে, সনাতন ধর্ম ও অন্যান্য ধর্মে পরস্পর বিরোধী কথা থাকবে না। তারপর উপলব্ধি করলাম যে, সত্য একটাই। তাদের আরো কিছু কর্মকান্ড আমার ভালো লাগেনা। যেমন: মোহাম্মদ পূজা, যীশু পূজা, বড়দিন পালন, মন্দিরে বসে কুরআন পাঠ ইত্যাদি। তারপর ক্লাস ফাইভে একটি কোচিং এ ভর্তি হই। ওখানে স্যার ছিল অন্যধর্মের। ক্লাসে একমাত্র আমিই সনাতনী। ধর্ম ক্লাসে তাদের পাঠ শুনতে হতো। একই ঘটনা ঘটে তৃতীয় শ্রেণীতে। মাঝেমধ্যে স্যার ও বন্ধুরা ইশারা ইঙ্গিতে সনাতন ধর্মের অপমান করত। যেমন: তুলসী পূজা, শিবলিঙ্গ, প্রতিমা পূজা, ৩৩ কোটি দেবতা। কিন্তু সেই সময় অন্য ধর্মের প্রতি অনুরাগ জন্মায়নি। সেই সময় ইসকনের প্রতি আকর্ষণ জন্মেছিল। তাদের শ্রীমদ্ভাগবদগীতা যথাযথ পরে তাদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু তাদের গীতা পড়ে মনে কিছু প্রশ্ন জাগত। যেমন: বেদনিন্দা, বৈদিক শাস্ত্রে পশুবলি, কোথায় কোথায় ভক্তিযোগ ও কৃষ্ণভাবনামৃত। কিন্তু তারপরও তাদের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। ঠিককরে ছিলাম তাদের প্রকাশিত বইগুলো পড়ব। কয়েকটি বই কিনেও ফেলি। যেমন: বিজ্ঞান সনাতন ধর্ম বিশ্বসভ্যতা, ধর্মক্ষেত্র, বেদের সারকথা, নামহট্ট পরিচয়, লীলা পুরোষত্তম শ্রীকৃষ্ণ ইত্যাদি। কিন্তু প্রতিটি বই পড়ে মনে সন্দেহ জাগ্রত হতো।


১ম ৩টি বইয়ে মুহাম্মদ, যীশু অবতার, ২য় বইয়ে নাম অপরাধ এ শিবকে ভগবান মানলে নাস্তিক হয়ে যায়, ৩য় বইয়ে চরম ও জঘন্যভাবে শ্রীকৃষ্ণকে অপমান যা বলার ভাষায় নেই। এগুলো দেখে এ মতের প্রতি আর্কষণ চলে গেল। আমি এরপর এক দাদার বাসায় বেড়াতে যাই। দাদা বলে মহাভারতে ২৪০০০শ্লোক, রাধা কাল্পনিক। তার মুখেই ১ম বাংলাদেশ অগ্নিবীরের নাম শুনেছিলাম। দাদার কথা শুনে নাস্তিক মনে হতো। তিনি এ বিষয়ে কথা বড়ান নি। পরে ক্লাস ৬ এ উঠি। সনাতনধর্ম ক্লাস নিতেন বিধর্মী স্যার। তিনি বলতেন, দেবতাদের মধ্যেও ভাগ -বৈদিক, পৌরাণিক, লৌকিক, ৩৩ কোটি ভগবান কাকে মানবো, পাথর পূজা, গাছ পূজা ইত্যাদি। 


তারমুখে জাকির নায়েকের নাম শুনি। তার ভিডিও, ব্রাদার রাহুলের ভিডিও, ব্রাদার ইব্রাহীমের ভিডিও ইত্যাদি দেখে এটিকে সত্য মনে করি। লুকিয়ে রীতিনীতি মানার সিদ্ধান্ত নিই। তখন বিশেষ ধর্মের দিকে আর্কষিত হয়েছিলাম। ব্রেইন ওয়াশের ফলে মনে করেছিলাম এটি সত্য। বড় হয়ে তা গ্রহণ করব। মা-বাবার মনে কষ্ট দিয়েও তা গ্রহন করব। তারপর ইউটিউবে বাংলাদেশ অগ্নিবীরের ভিডিও পাই, সনাতন বৈদিক ধর্মের ভিডিও পাই। তা দেখে সত্য জানি। এতে আরও সহায়ক ছিল VEDA - The infallible word of GOD, 🕉 শাস্ত্রপৃষ্ঠা, স্বাধ্যায় ইত্যাদি। 


 বর্তমানে ক্লাস ৮ এ পড়ি। সত্য সম্বন্ধে জ্ঞাত। বিধর্মী বন্ধুদের প্রশ্নের জবাব দেই। বাংলাদেশ অগ্নিবীর,  🕉 শাস্ত্রপৃষ্ঠা এর কাছে অসংখ্য ধন্যবাদ। তারা আমাকে নিজ ধর্ম সম্পর্কে জানিয়ে বিধর্মে যাওয়া হতে বাঁচিয়েছেন। 


এখন, আমি আর্য,আমি বৈদিক, আমার ধর্ম সনাতন, এখন আমি গর্ব করি যে আমি সনাতনী।


প্রণাম।

জয় সনাতন


ওতম্ কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম্ 🕉️🚩🚩

Post a Comment

0 Comments