ধর্মান্তররোধের গল্প

ধর্মান্তররোধের গল্প

♦️♦️ ধর্মান্তররোধের গল্প ♦️♦️

গল্পটি বেশ দীর্ঘ। এক মুসলিম ব্যক্তি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দুকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানায়। এর প্রতিউত্তরে হিন্দু ব্যক্তি বেশকিছু প্রশ্ন উপস্থাপনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের অসারতা প্রমাণ করে। সেইসব প্রশ্নোত্তর বা আলোচনা নিয়ে রচিত হয়েছে 'ধর্মান্তরের গল্প'। এর প্রথম অংশ বাহুল্যবোধে বিসর্জন দেয়া হল। দ্বিতীয় অংশটিতে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন ও তার উত্তরগুলো জানা যায়। সেজন্য দ্বিতীয় অংশটি প্রকাশ করা হল।

২য় অংশ


এরপর আমি তাকে দুই দিন পর কথা বলতে বললাম। কারণ আমি একটু প্রস্তুতি নিতে চাইছিলাম। তিনি যা বললেন এর বিপরীতে কিছু বলতে গেলে আমার কিছু কথা জানতে হতো? 


দুইদিন পর বিকেলের দিকে আমার এলাকায় দিঘির পাড়ে তিনি এসে আমাকে ডাকলেন। বলে রাখা ভালো আমার বাড়িটা দিঘির কাছেই। আমি এলে তিনি জানতে চাইলেন আমি কি ভাবলাম? 


আমি বললাম, দেখুন, আপনি যা যা বলেছিলেন সে বিষয়ে একটু জানার চেষ্টা করেছিলাম। আমার কিছু প্রশ্ন আছে। আপনি যদি সঠিক উত্তর দিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য সুখবর আছে আর না পারলে আপনাকে আমার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে।


তিনি বললেন, আচ্ছা বলুন কি আপনার জিজ্ঞাসা? 


এবার বললাম, আচ্ছা, আপনি বলেছিলেন ইসলামের চোখে সবাই এক তাহলে নবীজি আর আপনি তো ইসলামের চোখে এক তাই না? তার সম্মান আর আপনার সম্মান তো একই? 


তিনি বললেন, আস্তাগফিরুল্লাহ কী বলছেন এসব? নবীজির সাথে কারো তুলনা হয় না। তিনি আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা। 


আমি বললাম,কেন?

তিনি বললেন, নবীজি তো ইসলামের জন্য সারাজীবন কাজ করে গেছেন তাই তার স্থান  আমাদের মাঝে সবার উপরে। 


আমি বললাম, তাহলে তো ইসলামের চোখে সবাই এক  নয়। প্রত্যেকের কাজ নির্ণয় করে দেয় যে সে কতটুকু সম্মানের যোগ্য। আমাদের সনাতন ধর্মে তো একজন মুচির জন্য ঈশ্বর যা, একজন রাজার জন্যও ঈশ্বর তাই। তাদের মধ্যে যে ঈশ্বরকে ডাকবে সেই পাবে। কর্মই মুখ্য। এটা তো তাহলে সকল ধর্মেই আছে। 


তিনি চুপ করে গেলেন। কিছু একটা বলতে চাইছিলেন কিন্তু আমি আবার বললাম, আচ্ছা আপনাদের মাঝে তো জাতের ভেদাভেদ নেই  তাই না?


তিনি বললেন, না নেই। (অল্প করে রেগে গেছেন) 


আমি বললাম, আচ্ছা তাহলে শিয়াদের মসজিদে সুন্নিরা নামাজ পড়ে না কেন? তারা তো সবাই মুসলমান এবং আল্লাহর উপাসনাই করে। আমাদের মত তো কেউ শৈব, কেউ বৈষ্ণব এমন ব্যাপার  না তাই নয় কি? 


তিনি বললেন,  আপনি মুসলমান হলে এসব নিজেই বুঝে যাবেন।

আমি এবার আসল জায়গায় আঘাত করলাম। বললাম, আপনি তো আমায় বলেছিলেন আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ভিন্নতা বেশি। তাহলে আপনাদের মাঝে যে ভিন্নতাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কেন কথা বলেন না? 


তিনি জোর দাবি করে বললেন, আমাদের মাঝে আর কোনো ভেদাভেদ নেই। থাকলে আপনি বলুন।

আমি জানতে চাইলাম, যদি বলতে পারি তবে কী করবেন? 


তিনি বললেন, আপনি বলেন তো আগে। (খুব তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন) 


আমি বললাম, আচ্ছা আপনাদের জান্নাতে কে যাবে?

তিনি বললেন, শুধু মুসলমান। 


আমি বললাম, কোন্ মুসলমান? শিয়া নাকি সুন্নি?

তিনি বললেন, অবশ্যই সুন্নি। 


আমি জানতে চাইলাম, সুন্নি তো দুই ধরনের হয়। মুকল্লিদ আর গের-মুকল্লিদ। এর মধ্যে কে জান্নাত পাবে?

তিনি একটু অবাক হলেন। বললেন, মুকল্লিদরা জান্নাতে যাবে। 


এবার আমি বললাম, মুকল্লিদরা তো চার ভাগ। কোন ভাগের লোকজন জান্নাতে যায়?

সে খুব বিরক্ত হয়ে গিয়ে বললো, আপনি এত জানেন তাহলে এটাও তো জানার কথা। শুধু শুধু ঝামেলা করছেন কেন?


আমি বললাম, আপনি কথা দিয়েছেন আমি যা জানতে চাইবো তাই জানাবেন। তাহলে আমার প্রশ্নে আপনার সমস্যা কোথায়?

তিনি এক প্রকার বাধ্য হয়েই বললেন, হানাফিরাই সবচেয়ে উত্তম। তাই তারা আগে জান্নাতে যাবে। 


এবার আমি বললাম, হানাফিরা তো দুই ধরনের হয়। দেওবন্দি আর বরেলভী। তাহলে এদের মধ্যে কারা শ্রেষ্ঠ আর জান্নাতে যাবে?

তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে তাকিয়ে থেকে বললেন, দেওবন্দিরা আরো উচ্চ শ্রেণির। তাদের ধর্মজ্ঞান বেশি তাই তারাই যাবে। 


আমি বললাম, আর দেওবন্দিদের যে দুই ভাগ। হায়াতি আর মমাতি। এদের মধ্যে কারা সচরাচর জান্নাত পায়?

তিনি বললেন, ভাই আপনার সাথে কথা বললে আমার ঈমান দুর্বল হবে। আমি আজ আসি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ