কুমিল্লার কা‌লীগাছতলা মন্দিরে ভাঙচুর: ১৭ আসামি রিমান্ডে

কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে হামলার পরদিন বৃহস্পতিবারও ভাঙা কাচ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে হামলার পরদিন বৃহস্পতিবারও ভাঙা কাচ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

কুমিল্লা প্রতিনিধি,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published: 03 Nov 2021 01:48 PM BdST Updated: 03 Nov 2021 02:00 PM BdST


কুমিল্লায় ঠাকুরপাড়া কালীগাছতলার কালী মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৭ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।


বুধবার কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কান্তি নাথ এ আদেশ দেন।


কুমিল্লা কোর্ট পরিদর্শক সালাউদ্দিন আল মাহমুদ জানান, নগরীর ঠাকুরপাড়া কালীগাছতলার শ্রী শ্রী কা‌লিবা‌ড়ি মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় দুপুরে ১৮ আসামিকে আদালতে তুলে সাতদিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক ১৭ জনের ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


বাকি এক আসামির বয়স ১৪ বছরের নিচে। তার বিষয়ে আদালত কি আদেশ দিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।  


দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পন সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাংচুর চালানো হয় অন্তত আটটি মন্দিরে।


তার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন।


এর পরের কয়েকদিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুজন।


এর মধ্যে কুমিল্লা পুলিশ বুধবার নানুয়া দীঘির পাড়ের দুটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইকবাল নামে ওই যুবককে শনাক্তের কথা জানায়।


একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে এক যুবককে রাত ২টার পর স্থানীয় দারোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরী (রহ.) এর মাজার থেকে বেরিয়ে পূজামণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায়, তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল।


এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায় আরেক ভিডিওতে, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।


স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা ছিল।


এ ঘটনায় ২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


এর আগে ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল একটি ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করেই।


২০১২ সালের শেষ দিকে ফেইসবুকে কথিত কুরআন অবমাননার ছবি ছড়িয়ে তাণ্ডব চালানো হয় কক্সবাজারের রামু উপজেলার বৌদ্ধ বসতিতে। সে সময় ১২টি বৌদ্ধমন্দির এবং বৌদ্ধদের ৩০টি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।


২০১৭ সালের নভেম্বরে ফেইসবুকে গুজবের সূত্র ধরে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটে।


গত বছর কুমিল্লার মুরাদপুর এবং এর আগে একই জেলার হোমনা, পাবনার সাঁথিয়া, সাতক্ষীরার ফতেহপুরে ফেইসবুকে গুজব থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়ায়।


সূত্র: বিডিনিউজ ২৪

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ