বৌদ্ধদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থ নিয়ে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার কারণ কি সেনরাজারা❓

বৌদ্ধদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থ নিয়ে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার কারণ কি সেনরাজারা❓
 

বাংলা ভাষার প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন চর্যাপদ যা ৭ম শতকে রচিত বলে গবেষকগণ মনে করেন। ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের লাইব্রেরি থেকে এই প্রাচীন বইটিকে আবিস্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। কিন্তু বাংলার বই কীভাবে নেপালে গেল? এর পিছনে লুকিয়ে আছে এক নির্মম ইতিহাস। চর্যাপদ মূলত ছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুদের লেখা গ্রন্থ। কিন্তু হিন্দু-বৌদ্ধদের উপর খিলজি-সুলতান মাহমুদ গংদের একের পর এক অত্যাচার, মন্দির ভাংচুর, গ্রন্থশালা জ্বালিয়ে দেয়া, গণহত্যায় বিপর্যস্ত, সন্ত্রস্ত নিরীহ মানুষরা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যান নানা জায়গায়। এরই একটি অংশ হিসেবে বাংলার বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের হাত থেকে বাঁচতে নিজেদের গ্রন্থ নিয়ে পালিয়ে যান নেপালে। ইতিহাসের সেই অধ্যায় নিয়ে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় বলেছেন-


❝খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এসিয়াবাসী মুসলমানগণ বৌদ্ধগণের প্রতি অত্যন্ত বিদ্বেষভাবাপন্ন হইয়া উঠিয়াছিলেন। মুসলমানগণের অত্যাচার-ভয়ে বৌদ্ধভিক্ষুকগণ অমূল্য ধর্মগ্রন্থনিচয় ও দেবমূর্ত্তিসকল সঙ্গে লইয়া নেপালে পলায়ন করিয়াছিলেন। এইজন্যই নেপালে পাল-রাজগণের রাজত্বকালে লিখিত বহু বৌদ্ধ-গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে।❞

(বাঙ্গালার ইতিহাস, ১ম খণ্ড, ২য় সংস্করণ, শ্রীরাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ২৮৬ পৃষ্ঠা)


সূত্র: অগ্নিবীর

Post a Comment

0 Comments