বৈদিক শাস্ত্রে কোথায় ঈশ্বরের সাকারত্ব এবং মূর্তিপূজার উল্লেখ আছে কী?

মূর্তিপূজা


[বি:দ্রঃ- কতিপয় দল ঈশ্বরের সাকারত্ব ও মূর্তি পুজা অস্বীকার করার জন্যে বিভিন্ন ভাবভঙ্গী দেখাবে।। যেমন এই ভাষ্য বিকৃত আমাদের ভাষ্যই স্বীকৃত। তাদের জানিয়ে রাখি এই আর্টিকেলটিতে সম্পূর্ণ ৬০+ উপরে শাস্ত্রীয় প্রমাণ সহ দেওয়া হয়েছে সেও একটি শাস্ত্র থেকে নয়, একাধিক শাস্ত্র থেকে (ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ, উপনিষদ, ব্রাহ্মণ, সংহিতা, ইতিহাস, নীতিশাস্ত্র, অন্যান্য অনুগামী শাস্ত্র)।] 


বেদে ঈশ্বরকে সাকার বলা হয়েছে। আর আমরা তো জানি, দেবতারা সাকার। সুতারাং বেদ শাস্ত্রে যে ঈশ্বর এবং দেবতাদের শ্রীমূর্তি বা শ্রীবিগ্রহকে আরাধনা বা পূজা করার বিধান প্রদত্ত আছে, এটিই স্বাভাবিক। যদিও বেদ এবং অন্যন্যা সনাতনী শাস্ত্র অনুসারে পরমেশ্বর ভগবানের সুন্দর অপ্রাকৃত দেহ বিদ্যমান, কিন্তু আমরা সে অপ্রাকৃত দেহ প্রাকৃত চক্ষু দিয়ে দেখতে পাব না।তার জন্য চিন্ময় বা অপ্রাকৃত চক্ষু প্রয়োজন।তাই বেদে পরমেশ্বর ভগবান এবং দেবতাদের শ্রীমূর্তি/ শ্রীবিগ্রহ নির্মান করে, উপযুক্ত মন্ত্রের মাধ্যমে অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে, সে মুর্তিতে ভগবান ও দেবতা অধিষ্ঠান হয়েছেন,এরুপ চিন্তা করে তাদের পূজা ও বন্দনা করার নির্দেশ প্রদত্ত হয়েছে।


১। ঋগ্বেদ থেকে প্রমাণ~


इ॒दं विष्णु॒र्वि च॑क्रमे त्रे॒धा नि द॑धे प॒दम्।

समू॑ळ्हमस्य पांसु॒रे ॥

ইদং বিষ্ণুর্বি চক্রমে ত্রেধা নিদধে পদং।

সমূলহমস্য পাংসুওে॥

– [ঋগ্বেদ ১/ ২২/ ১৭]

অর্থাৎ, “বিষ্ণু এ জগৎ পরিক্রমা করেছিলেন, তিন প্রকার পদবিক্ষেপ করেছিলেন, তাঁর ধুলিযুক্ত পদে জগৎ আবৃত হয়েছিল।”


त्रीणि॑ प॒दा वि च॑क्रमे॒ विष्णु॑र्गो॒पा अदा॑भ्यः।

अतो॒ धर्मा॑णि धा॒रय॑न् ॥

ত্রীণি পদা বি চক্রমে বিষ্ণু র্গোপা অদাভ্যাঃ।

অতো ধর্মাণি ধারয়ন্॥

– [ঋগ্বেদ ১/ ২২/১৮]

অর্থাৎ, “বিষ্ণু রক্ষক, তাঁকে কেহ আঘাত করতে পারে না, তিনি ধর্ম সমুদয় ধারণ করে তিন পদ পরিক্রমা করেছিলেন।”


तद्विष्णो॑: पर॒मं प॒दं सदा॑ पश्यन्ति सू॒रय॑:।

दि॒वी॑व॒ चक्षु॒रात॑तम् ॥

তদ্বিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ।

দিবীব চক্ষুরাততম্॥

– [ঋগ্বেদ ১/২২/২০]

অর্থাৎ, “আকাশে সর্বতো বিচারী যে চক্ষু যেরূপ দৃষ্টি করে, বিদ্বানেরা বিষ্ণুর পরমপদ সেরূপ দৃষ্টি করেন।”


तद्विप्रा॑सो विप॒न्यवो॑ जागृ॒वांस॒: समि॑न्धते।

विष्णो॒र्यत्प॑र॒मं प॒दम् ॥

তদ্বিপ্রাসো বিপন্যবো জাগৃবাংসঃ সমিন্ধতে।

বিষ্ণো র্যৎ পরমং পদম॥

– [ঋগ্বেদ ১/২২/২১]

অর্থাৎ, “স্তুতিবাদক ও সদাজাগরূক মেধাবী লোকেরা যে বিষ্ণুর পরমপদ প্রদীপ্ত করেন।”


दि॒वश्चि॑दस्य वरि॒मा वि प॑प्रथ॒ इन्द्रं॒ न म॒ह्ना पृ॑थि॒वी च॒न प्रति॑ ।

भी॒मस्तुवि॑ष्माञ्चर्ष॒णिभ्य॑ आत॒पः शिशी॑ते॒ वज्रं॒ तेज॑से॒ न वंस॑गः ॥

divaś cid asya varimā vi papratha indraṃ na mahnā pṛthivī cana prati |

bhīmas tuviṣmāñ carṣaṇibhya ātapaḥ śiśīte vajraṃ tejase na vaṃsagaḥ ||

– [ঋগবেদ:- ১/৫৫/১]


অর্থাৎ, হে অধ্বর্যুগণ! তোমরা স্তুতিপ্রিয় মহাবীর ইন্দ্রের নিমিত্ত এবং বিষ্ণুর জন্য পানীয় সোমরস যত্নপূর্বক প্রস্তুত কর। তাঁর উভয়ে দুর্ধর্ষ ও মহীয়ান। তাঁরা মেঘের উপর ভ্রমণ করেন, যেন সুশিক্ষিত অশ্বের উপর আরোহণ করে ভ্রমণ করছেন।


च॒तुर्भि॑: सा॒कं न॑व॒तिं च॒ नाम॑भिश्च॒क्रं न वृ॒त्तं व्यतीँ॑रवीविपत् ।

बृ॒हच्छ॑रीरो वि॒मिमा॑न॒ ऋक्व॑भि॒र्युवाकु॑मार॒: प्रत्ये॑त्याह॒वम् ॥


caturbhiḥ sākaṃ navatiṃ ca nāmabhiś cakraṃ na vṛttaṃ vyatīm̐r avīvipat |

bṛhaccharīro vimimāna ṛkvabhir yuvākumāraḥ praty ety āhavam ||

– [ঋগ্বেদ:- ১/১৫৫/৬]


অর্থাৎ, ঈশ্বরের বৃহৎ শরীর (बृहत्शरीरः । bṛhat-śarīraḥ |) আছে।


यः पूर्व्याय वेधसे नवीयसे सुमज्जानये विष्णवे ददाशति ।

यो जातमस्य महतो महि ब्रवत्सेदु श्रवोभिर्युज्यं चिदभ्यसत् ॥

যঃ পূর্ব্যায় বেধসে নবীয়সে সুমজ্জানয়ে বিষ্ণবে দদাশতি।

যঃ জাতমস্য মহতো মহি ব্রবৎ সেদূ শ্রবোভির্যূজ্যং চিদভ্যসৎ॥


yaḥ pūrvyāya vedhase navīyase sumajjānaye viṣṇave dadāśati |

yo jātam asya mahato mahi bravat sed u śravobhir yujyaṃ cid abhy asat ||

– [ঋগ্বেদ :- ১/১৫৬/২]


“যে মনুষ্য প্রাচীন, মেধাবী, নিত্য নতুন ও সূমজ্জানি বিষ্ণুকে হব্য প্রদান করেন; যিনি মহানুভব বিষ্ণুর পূজনীয় জন্ম (কথা) কীর্তন করেন, তিনিই যুজ্য (ভগবানের ধাম) প্রাপ্ত হন। অর্থাৎ, তিনি জন্ম নেন (यः । जातम् । अस्य । yaḥ | jātam | asya |)।


प॒रो मात्र॑या त॒न्वा॑ वृधान॒ न ते॑ महि॒त्वमन्व॑श्नुवन्ति ।

उ॒भे ते॑ विद्म॒ रज॑सी पृथि॒व्या विष्णो॑ देव॒ त्वं प॑र॒मस्य॑ वित्से ॥

পরো মাত্রয়া তন্বা বৃধান ন তে মহিত্বমন্বশ্নুবন্তি।

উভে তে বিদ্ম রজসী পৃথিব্যা বিষ্ণো দেব ত্বং পরমস্য বিৎসে॥

– [ঋগ্বেদ ৭/৯৯/১]

অর্থাৎ, “হে বিষ্ণু, তুমি মাত্রার অতীত শরীরে বর্ধমান হলে তোমার মহিমা কেউ অনুব্যাপ্ত করতে পারে না, পৃথিবী হতে আরম্ভ করে উভয় লোক আমরা জানি, কিন্তু তুমিই কেবল হে দেব, পরমলোক অবগত আছ।”


नू मर्तो॑ दयते सनि॒ष्यन्यो विष्ण॑व उरुगा॒याय॒ दाश॑त् ।

प्र यः स॒त्राचा॒ मन॑सा॒ यजा॑त ए॒ताव॑न्तं॒ नर्य॑मा॒विवा॑सात् ॥

নূ মর্তো দয়তে সনিষ্যন্যো বিষ্ণব উরুগায়ায় দাশ।

প্র যঃ সত্রাচা মনসা যজাত এতাবন্তং নর্যমাবিবাসাৎ।।

nū marto dayate saniṣyan yo viṣṇava urugāyāya dāśat |

pra yaḥ satrācā manasā yajāta etāvantaṃ naryam āvivāsāt ||

– [ঋগবেদ:-৭/১০০/১]


অর্থাৎ, যিনি বহুলোকের কীর্তনীয় বিষ্ণুকে হব্য দান করেন, যিনি যুগপৎ উচ্চারিত স্তোত্রের দ্বারা পূজা করেন এবং মনুষ্যগণের হিতকর বিষ্ণুর পরিচর্যা করেন সে মর্ত্যধন ইচ্ছা করে শীঘ্র প্রাপ্ত হন।


    বিশ্লেষণ: যদি বিগ্রহ বা শ্রীমূর্তি পূজা বেদবিহিত না হত,তাহলে এ মন্ত্রে পূজা,পরিচর্যার প্রসঙ্গই আসতো না।


अर्च॑त॒ प्रार्च॑त॒ प्रिय॑मेधासो॒ अर्च॑त ।

अर्च॑न्तु पुत्र॒का उ॒त पुरं॒ न धृ॒ष्ण्व॑र्चत ॥

অচর্ত প্রার্চত প্রিয়মেধসো অচর্ত।

অচন্তু পুত্রকা উত পুরং ন ধৃঞ্চবচর্ত।।

arcata prārcata priyamedhāso arcata |

arcantu putrakā uta puraṃ na dhṛṣṇv arcata ||

– [ঋগবেদ:- ৮/৬৯/৮]


অর্থাৎ, হে প্রিয়মেধগণ! তোমরা ইন্দ্রক অর্চনা কর। বিশেষরূপে অর্চনা কর, পুত্রগণ পুরবিদারীকে যেরূপ অর্চনা করে, সেরূপ ইন্দ্রের অর্চনা করুক।


    বিশ্লেষণ: বেদে ঈশ্বরকে ইন্দ্র বলা হয়েছে। বিগ্রহ আরাধনা বা শ্রীমুর্তি পূজা বেদবিহিত না হতো তবে উক্ত মন্ত্রে ইন্দ্রকে বিশেষ রূপে অর্চনা বা পূজা করার প্রসঙ্গ আসতো না। কারন নিরাকার ঈশ্বরকে কখনো পূজা করার কথা শাস্ত্রে বলা হয় না। সুতারাং মুর্তি পূজা বেদবিহিত।


विश्वतश्चक्षुरुत विश्वतोमुखो विश्वतोबाहुरुत विश्वतस्पात् ।

सं बाहुभ्यां धमति सं पतत्रैर्द्यावाभूमी जनयन्देव एकः ॥


viśvataścakṣur uta viśvatomukho viśvatobāhur uta viśvataspāt |

sam bāhubhyāṃ dhamati sam patatrair dyāvābhūmī janayan deva ekaḥ ||

– [ঋগ্বেদ:- ১০/৮১/৩]


অর্থাৎ, সর্বত্র তার হাত, পা, মূখ, চোখ (वि॒श्वत॑श्चक्षुरु॒त वि॒श्वतो॑मुखो वि॒श्वतो॑बाहुरु॒त वि॒श्वत॑स्पात् ।)।


स॒हस्र॑शीर्षा॒ पुरु॑षः सहस्रा॒क्षः स॒हस्र॑पात्।

स भूमिं॑ वि॒श्वतो॑ वृ॒त्वात्य॑तिष्ठद्दशाङ्गु॒लम् ॥

সহস্রাশীর্ষা পুরুষাঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রাপাৎ।

স ভূমিং বিশ্বতো বৃহাত্যতিষ্ঠদ্দশাঙ্গুলম্ ॥

– [ঋগ্বেদ১০/৯০/১]

অর্থাৎ, “পুরুষের সহস্র মস্তক, সহস্র চক্ষু ও সহস্র চরণ।…”


कासी॑त्प्र॒मा प्र॑ति॒मा किं नि॒दान॒माज्यं॒ किमा॑सीत्परि॒धिः क आ॑सीत् ।

छन्द॒: किमा॑सी॒त्प्रउ॑गं॒ किमु॒क्थं यद्दे॒वा दे॒वमय॑जन्त॒ विश्वे॑ ॥

কাসীৎপ্রমা প্রতিমা কিং নিদানমাজ্যং কিমাসীৎপরিধিঃ ক আসীৎ।

ছন্দঃ কিমাসীৎ প্রউগং কিমুকথং যদ্দেবা দেবমযজন্ত বিশ্বে।।

kāsīt pramā pratimā kiṃ nidānam ājyaṃ kim āsīt paridhiḥ ka āsīt |

chandaḥ kim āsīt praügaṃ kim ukthaṃ yad devā devam ayajanta viśve ||

– [ ঋগ্বেদ ১০/১৩০/৩ ]


অর্থাৎ, যে কালে সকল দেবতা দেবপূজা করলেন তখন তাদের অনুষ্ঠিত যজ্ঞের পরিমাণ কি ছিল? দেব মূর্তি বা কি ছিল? সংকল্প কি ছিল? ঘৃত কি ছিল? পরিধি অর্থাৎ যজ্ঞস্থানের চতুর্দিকের বৃত্তি স্বরূপ সীমা বন্ধনই বা কি ছিল? ছন্দ প্রয়োগই বা কি ছিল?


    বিশ্লেষণ: উক্ত মন্ত্রে মন্ত্র দ্রষ্টা ঋষি বর্তমানের কথা অনুধাবন করে পূর্বের অবস্থা বুঝার জন্য প্রশ্ন করেছেন। এই মন্ত্রে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষির সময় দেব মূর্তি বিদ্যমান ছিল এবং তাহার পূজাও করা হতো।এ বেদ মন্ত্র থেকে বুঝা যায় দেবতাদের শ্রীমূর্তির পূজা বেদবিহিত।


ক্ষীরেণ স্নাপিতা দুর্গা চন্দনেনানুলেপিতা।

বৈল্বপত্রকৃতামালা নমো দুর্গে নমো নমঃ।।

– [ ঋগ্বেদ, আশ্বলায়ন শাখা, ১০।১২৮। ৮ ]


অর্থাৎ, দুধের ক্ষীর দ্বারা স্নাপিতা, চন্দনাদি দ্বারা অনুলিপ্তা এবং বিল্বপত্রের মাল্যধারিণী সেই দুর্গাকে বারংবার নমস্কার করি।


    বিশ্লেষণ: উক্ত মন্ত্রে দেবী দুর্গাকে বিল্বপত্রের মাল্য প্রদানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, তার দেহ চন্দন আদি দ্রব্য দিয়ে অনুলিপ্তা বলা হয়েছে। এখান থেকে বুঝা যায়, বেদে দেবতা ও ভগবানের শ্রীমুর্তির পূজা বিধান প্রদত্ত হয়েছে।



২। যজুর্বেদ থেকে প্রমাণ~


    [শুক্ল যজুর্বেদ:- ১৬/২]- ঈশ্বরের তনু বা শরীর আছে। [या ते॑ रुद्र शि॒वा त॒नूरघो॒राऽपा॑पकाशिनी। तया॑ नस्त॒न्वा᳕ शन्त॑मया॒ गिरि॑शन्ता॒भि चा॑कशीहि ॥

    [শুক্ল যজুর্বেদ:- ৩১/২] – ঈশ্বর শ্রুতিযুক্ত। [पुरु॑षऽए॒वेदः सर्वं यद् भू॒तं यच्च॑ भा॒व्य॒म् । उ॒तामृ॑त॒त्वस्येशा॑नो॒ यदन्ने॑नाति॒रोह॑ति ॥]

    [শুক্ল যজুর্বেদ:- ৩২/২] – তিনি প্রকাশমান। [सर्वे’ निमे॒षा ज॑ज्ञरे वि॒द्युतः॒ पुरु॑षा॒दधि॑ । नैन॑मू॒र्ध्वं न ति॒र्य॑ञ्च॒ न मध्ये॒ परि॑जग्रभत् ॥]

    [শুক্ল যজুর্বেদ:- ৩২/৪]- তার মুখ আছে। [ए॒षो ह॑ दे॒वः प्र॒दिशोऽनु॒ सर्वाः पूर्वो ह जा॒तः सऽउ॒ गर्भेऽअ॒न्तः । स ए॒व जा॒तः स ज॑नि॒ष्यमा॑णः प्र॒त्यङ् जन- स्तिष्ठति स॒र्वतो॑मुखः ॥]

    [শুক্ল যজুর্বেদ:- ৪০/১৭]- তেজোমণ্ডলের দ্বারা আদিত্যমণ্ডল স্থিত অবিনাশী পুরুষের শরীর আচ্ছন্ন রয়েছে। তবুও সূর্যমণ্ডলে যে পুরুষ প্রত্যক্ষ, তা কার্যকারণের সংঘাতের দ্বারা প্রবিষ্ট আমি। আকাশের মতো ব্যাপক ব্রহ্মের ওঁ-কারের দ্বারা ধ্যান করছি। [हि॒र॒ण्मये॑न॒ पात्रे॑ण स॒त्यस्यापि॑हितं॒ मुखम्। यो॒ऽसावा॑दि॒त्ये पु॑रुषः॒ सो᳕ऽसाव॒हम्। ओ३म् खं ब्रह्म॑ ॥]



दि॒वो वा॑ विष्णऽउ॒त वा॑ पृथि॒व्या म॒हो वा॑ विष्णऽउ॒रोर॒न्तरि॑क्षात्।


उ॒भा हि हस्ता॒ वसु॑ना पृ॒णस्वा प्रय॑च्छ॒ दक्षि॑णा॒दोत स॒व्याद्विष्ण॑वे त्वा ॥

দিবো বা বিষ্ণো উত বা পৃথিব্যা মহো বা বিষ্ণু উরোরন্তরিক্ষাৎ।

উভো হি হস্তা বসুনা পূনস্বা প্রযচ্ছ দক্ষিণাদোত সব্যাদ্বিষ্ণবে দ্বা।।

– [ শুক্ল যজুর্বেদ ৫।১৯ ]


অর্থাৎ, হে বিষ্ণু(ঈশ্বর),তুমি দ্যুলোক অথবা ভূলোক হতে কিংবা মহান বিস্তৃত অন্তরিক্ষলোক হতে, তোমার উভয় হস্ত ধনের দ্বারা পূর্ণ কর। এবং দক্ষিণ অথবা বাম হস্তে আমাদের দান কর।



৩। অথর্ববেদ থেকে প্রমাণ~


ये त्रिषप्ताः परियन्ति विश्वा रूपाणि बिभ्रतः ।

वाचस्पतिर्बला तेषां तन्वो अद्य दधातु मे ॥

Ye trishapta pariyanti vishva rupani bibhratah ।

vacaspatirbala tesaam tanvo adya dadhatu me॥

– [ অথর্ববেদ:- ১/১/১]


অর্থাৎ, ঈশ্বর অসংখ্য রূপ গ্রহণ করেন জগৎকে কল্যান করেন।


কিন্তু তারপরও আজকাল কিছু শাস্ত্রজ্ঞানহীন ব্যাক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে যে, বেদে নাকি ঈশ্বর বা দেবতাদের শ্রীমুর্তি পূজার কোন বিধান নাই।


৪। উপনিষদ থেকে প্রমাণ~


    [ ঈশোপনিষদ: – ১৫] – ঈশ্বরের মুখ আছে। [হিরণ্ময়েন পাত্রেণ সত্যস্যাপিহিতং মুখম্। তৎ ত্বং পূষন্নপাবৃণু সত্যধর্মায় দৃষ্টয়ে॥] [हिरण्मयेन पात्रेण सत्यस्यापिहितं मुखम् । तत्त्वं पूषन्नपावृणु सत्यधर्माय दृष्टये ॥]

    [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ :- ৩/৫] – ঈশ্বরের তনু বা শরীর আছে। [tanūraghorā’]

    [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:- ৩/১১] – ঈশ্বর সর্বত্রই বিভিন্ন কর্ম বিভিন্ন অঙ্গ দ্বারা করতে সমর্থ (অপানিপাদো জবনো গ্রহীতা…)। [sarvānanaśirogrīvaḥ sarvabhūtaguhāśayaḥ। sarvavyāpī sa bhagavāṃstasmātsarvagataḥ śivaḥ॥]

    [ শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:-৩/১৬] – সর্বত্র তাঁর হস্ত ও পদ বিস্তৃত। [সর্বতঃ পাণিপাদং তৎ…]

    [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:- ৩/২০] – ঈশ্বর ক্ষুদ্রত্তর থেকে ক্ষুদ্রতর আবার বৃহত্তর থেকে বৃহত্তর (অণোরণীয়ান্ মহতো মহীয়ান্)। [aṇoraṇīyānmahato mahīyānātmā guhāyāṃ nihito’sya jantoḥ।]

    [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:- ৪/১] – তিনি এক হয়ে ও বহু রূপে গ্রহন করেন। [ya eko’varṇo bahudhā śaktiyogādvarṇānanekānnihitārtho dadhāti।]

    [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:- ৪/৪] – নীলঃ বা নীল বর্ণের। [nīlaḥ pataṅgo harito]

    [বৃহদারণ্যক উপনিষদ:-২/৩/১] – ব্রহ্মের দুইটি রূপ, একটি মূর্ত অপরটি অমূর্ত । [द्वे वाव ब्रह्मणो रूपे—मूर्तं चैवामूर्तं च, मर्त्यं चामृतं च, स्थितं च यच्च, सच्च, त्यच्च ॥]

    [বৃহদারণ্যক উপনিষদ:- ২/৩/৬] – ঈশ্বরের শরীর (पुरुषस्य रूपम्), বস্ত্র (यथा माहारजनं वासः), চোখ আছে। [तस्य हैतस्य पुरुषस्य रूपम् । यथा माहारजनं वासः, यथा पाण्ड्वाविकम्, यथेन्द्रगोपः, यथाग्न्यर्चिः, यथा पुण्डरीकम्, यथा सकृद्विद्युत्तम्; सकृद्विद्युत्तेव ह वा अस्य श्रीर्भवति य एवं वेद; अथात आदेशः—नेति नेति, न ह्येतस्मादिति नेत्यन्यत्परमस्ति; अथ नामधेयम्—सत्यस्य सत्यमिति; प्राणा वै सत्यम्, तेषामेष सत्यम् ॥ इति तृतीयं ब्राह्मणम् ॥]

    [বৃহদারণ্যক উপনিষদ:- ৪/৫/১১] – ঈশ্বর নিশ্বাস নেন (निःश्वसितानि)। [स यथार्द्रैधाग्नेरभ्याहितस्य पृथग्धूमा विनिश्चरन्ति, एवं वा अरेऽस्य महतो भूतस्य निःश्वसितमेतद्यदृग्वेदो यजुर्वेदः सामवेदोऽथर्वाङ्गिरस इतिहासः पुराणं विद्या उपनिषदः श्लोकाः सूत्राण्यनुव्याख्यानानि व्याख्यानानीष्टं हुतमाशितं पायितम्, अयं च लोकः, परश्च लोकः, सर्वाणि च भूतानि, अस्यैवैतानि सर्वाणि निःश्वसितानि ॥]

    [ছান্দোগ্য উপনিষদ:- ১/৬/৬] – ঈশ্বরের নখ আছে (हिरण्यश्मश्रुर्हिरण्यकेश)। [अथ यदेवैतदादित्यस्य शुक्लं भाः सैव साथ यन्नीलं परः कृष्णं तदमस्तत्सामाथ य एषोऽन्तरादित्ये हिरण्मयः पुरुषो दृश्यते हिरण्यश्मश्रुर्हिरण्यकेश आप्रणस्वात्सर्व एव सुवर्णः ॥]

    [ছান্দোগ্য উপনিষদ:- ১/৬/৭] – ঈশ্বরের চোখ আছে (पुण्डरीकमेवमक्षिणी)। [तस्य यथा कप्यासं पुण्डरीकमेवमक्षिणी तस्योदिति नाम स एष सर्वेभ्यः पाप्मभ्य उदित उदेति ह वै सर्वेभ्यः पाप्मभ्यो य एवं वेद ॥]

    [ছান্দোগ্য উপনিষদ:- ৩/১৪/৪] – ঈশ্বর রূপ, রস, গন্ধযুক্ত (सर्वगन्धः सर्वरसः)। [सर्वकर्मा सर्वकामः सर्वगन्धः सर्वरसः सर्वमिदमभ्यात्तोऽवाक्यनादर एष म आत्मान्तर्हृदय एतद्ब्रह्मैतमितः प्रेत्याभिसंभवितास्मीति यस्य स्यादद्धा न विचिकित्सास्तीति ह स्माह शाण्डिल्यः शाण्डिल्यः ॥ ॥ इति चतुर्दशः खण्डः ॥]

    [মুণ্ডকোপনিষদ :- ৩/১/৭] – ঈশ্বর তিনি দূরে থেকে সুদূরে (दूरात्सुदूरे), এবং নিকট থেকে নিকটে (দূরাৎ সুদূরে তদিহান্তিকে চ…)। [दूरात्सुदूरे तदिहान्तिके च पश्यन्त्विहैव निहितं गुहायाम् ॥]

    [মুণ্ডক উপনিষদ :- ৩/২/৩] – “সুদক্ষ বিশ্লেষণের দ্বারা, বিশাল বুদ্ধিমত্তার দ্বারা, এমনকি বহু শ্রবণের দ্বারাও ভগবানকে লাভ করা যায় না। ভগবানকে তিনিই লাভ করতে পারেন, যাঁকে ভগবান কৃপা করেন। তাঁর কাছে তিনি তাঁর স্বরূপ প্রকাশ করেন।” [নায়মাত্মা প্রবচনেন লভ্যো ন মেধসা ন বহুনা শ্রুতেন। যমেবৈষ বৃণুতে তেন লভ্য-স্তস্যৈষ আত্মা বিবৃণুতে তনুং স্বাম্॥] [नायमात्मा प्रवचनेन लभ्यो न मेधया न बहुना श्रुतेन । यमेवैष वृणुते तेन लभ्यस्तस्यैष आत्मा विवृणुते तनूं स्वाम् ॥]


অর্থববেদের অন্তর্গত গোপালতাপনী উপনিষদ শ্রুতিতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই সমগ্র মানব জাতিকে তার শ্রীমূর্তির মাধ্যমে তাকে পূজার করার উপদেশ প্রদান করেছেন।এ সম্পর্কে গোপালতাপনী উপনিষদ শ্রুতিতে বর্ণিত আছে…


মথুরামণ্ডলে যস্তু জম্বুদ্বীপে স্থিস্তোহপি বা।

যোহর্চ্চয়েৎ প্রতিমাং মাঞ্চ সে ম প্রিয় ভরো ভূবি।।

– [গোপালতাপনী উপনিষদ, উত্তরবিভাগ, মন্ত্র ৪৭ (অথর্ববেদ)]


অর্থাৎ, হে ব্রহ্মা,মথুরামন্ডলে তথা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে ব্যাক্তি আমার প্রতিমারুপে উপাসনা করে, সে আমার অত্যন্ত প্রিয়।


তস্যামধিষ্ঠতঃ কৃষ্ণরূপী পূজ্যস্ত্বয়া সদা।

– [গোপালতাপনী উপনিষদ, উত্তরবিভাগ, মন্ত্র ৪৮ (অথর্ববেদ)]

অর্থাৎ, হে ব্রহ্মা, আমি মথূরায় কৃষ্ণরূপে অধিষ্ঠিত হয়ে সর্বদা তোমার পূজা গ্রহন করছি।


শ্বেতাশ্বতরোপনিষদের একটি মন্ত্রে বলা হয়েছে…তিনি সাকার (sraṣṭāramanekarūpam।) আবার তিনি নিরাকার। – [শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ:- ৪/১৪]

    বিশ্লেষণ:শ্রুতিতে পরস্পর বাক্য বিরুদ্ধ থাকলে সেখানে দুইটি বাক্যকেই ধর্ম বলে গণ্য করতে হবে। [श्रुतिद्वैधं तु यत्र स्यात् तत्र धर्मावुभौ स्मृतौ । उभावपि हि तौ धर्मौ सम्यगुक्तौ मनीषिभिः ॥] – [মনুস্মৃতি:- ২/১৪]



৫। ব্রাহ্মণ থেকে প্রমাণ~


    [ষড়বিংশ ব্রাহ্মণ:- ৬/১০/২]- দেবালয় গুলি কাঁপে, দেবতাদের মূর্তি হাসে, কাঁদে, গান গায় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য রয়েছে।


৬। সংহিতা থেকে প্রমাণ~


বেণুং ক্বণন্তমরবিন্দদলায়তাক্ষং

বর্হাবতংসমসিতাম্বুদসুন্দরাঙ্গম্ ।

কন্দর্পকোটিকমনীয়বিশেষশোভং

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।

– [ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩০]


অর্থাৎ, মুরলীগান-তৎপর, কমলদলের ন্যায় প্রফুল্লচক্ষু, ময়ূরপুচ্ছ শিরোভূষণ, নীল মেঘবর্ণ সুন্দর শরীর, কোটি কন্দর্প মোহন বিশেষ শোভা-বিশিষ্ট সেই আদি-পুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।


আলোলচন্দ্রক লসদবনমাল্যবংশী-

রত্নাঙ্গদং প্রণয়কেলিকলাবিলাসম্ ।

শ্যামং ত্রিভঙ্গললিতং নিয়তপ্রকাশং

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।

– [ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩১]


অর্থাৎ, দোলায়িত চন্দ্রক শোভিতা বনমালা যাঁর গলদেশে, বংশী ও রত্নাঙ্গদ যাঁর করদ্বয়ে, সর্বদা প্রণয়কেলি বিলাসযুক্ত যিনি, ললিত ত্রিভঙ্গ শ্যামসুন্দর রূপই যাঁর নিত্য প্রকাশ, সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজন করি।


অঙ্গানি যস্য সকলেন্দ্রিয়বৃত্তিমন্তি

পশ্যন্তি পান্তি কলয়ন্তি চিরং জগন্তি ।

আনন্দচিন্ময়সদুজ্জ্বলবিগ্রহস্য

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।

– [ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩২]


অর্থাৎ, সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি; তাহাঁর বিগ্রহ আনন্দময়, চিন্ময় ও সন্ময়, সুতরাং পরমোজ্জ্বল। সেই বিগ্রহগত অঙ্গসকল প্রত্যেকেই সমস্ত ইন্দ্রিয়বৃত্তি-বিশিষ্ট এই চিদচিৎ অনন্ত জগৎসমূহকে নিত্যকাল দর্শন, পালন ও কলন করেন।


রামাদিমূর্তিষু কলানিয়মেন তিষ্ঠন্

নানাবতারমকরোদ্ভুবনেষু কিন্তু ।

কৃষ্ণঃ স্বয়ং সমভবৎ পরমঃ পুমান্ যো

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।

– [ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৯]


অর্থাৎ, কলাবিভাগে রামাদি মূর্তিতে ভগবান জগতে নানা অবতার প্রকাশ করেছিলেন; কিন্তু যে পরম পুরুষ স্বয়ং কৃষ্ণরূপে প্রকট হন, সেই আদি-পুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।


যঃ কারণার্ণবজলে ভজতি স্ম যোগ-

নিদ্রামনন্তজগদণ্ডসরোমকূপঃ ।

আধারশক্তিমবলম্ব্য পরাং স্বমূর্তিং

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।


– [ব্রহ্মসংহিতা ৫/৪৭]


অর্থাৎ, আধার-শক্তিময়ী শেষাখ্যা শ্রেষ্ঠ-স্বমূর্তি অবলম্বনপূর্বক যিনি স্বীয় রোমকূপে অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে কারণার্ণবে শয়ন করে যোগনিদ্রা সম্ভোগ করেন, সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।


    [পরাশর সংহিতা:- ১/৭]- বদরিকাশ্রমের স্থানে স্থানে পবিত্র দেবতামন্দির সকল প্রতিষ্ঠিত ছিল।

    [বশিষ্ঠ সংহিতা:- ১০/৮]- অনেক দিন একস্থানে থাকিবে না, মনে মনে জ্ঞানাভ্যাস করত গ্রামের প্রান্তভাগ, দেবালয়, শুন্যাগার বা বৃক্ষমূলে অবস্থান করিবে।


৭। ঐতিহাসিক প্রমাণ~


    [রামায়ন:-অযোধ্যাকান্ড/৭ /৪]- দেবমন্দিরের দ্বারদেশ শুভ্র করা হইয়াছে। সকলপ্রকার বাদ্যযন্ত্র বাদিত হইতেছে।

    [রামায়ন:- অযোধ্যাকান্ড/১৭/১৬]-  রাজপুত্র শ্রীরামচন্দ্র চতুর্পথ সঙ্গমস্থল, দেবালয়ের পথসকল, দেবালয়গুলি এবং যজ্ঞবেদী সকল নিজের দক্ষিণ দিকে (ডান দিকে) রেখে অগ্রসর হতে লাগলেন।

    [মহাভারত:- দ্রৌন পর্ব/ ৬৯/৬১]- অশ্বত্থামা! শিব লিঙ্গের ও শিবের প্রতিমাতে শিবেব পূজা করিতেন। 

    [মহাভারত:- মৌষলপর্ব/ ৪/৩৩]- নারায়ণ বলিলেন! তোমরা পৃথিবীগত আমার অপ্রমেয মূর্ত্তির পূজা করিও। আমি সর্ব্বদাই নানা রূপে সেই পৃথিবীতে বাস করিয়া থাকি।

    [মহাভারত:- বনপর্ব/৩৫/৬৫]- অর্জুন! মহাদেবের শরণাপন্ন হইয়া, স্থণ্ডিলের উপরে তাঁহার মৃন্ময় প্রতিমা নির্মাণ করিয়া, মালা দ্বারা তাঁহার পূজা করিলেন।


৮। নীতিশাস্ত্র থেকে প্রমাণ~


लकड़ी, धातु या पत्थर की बना कर मूर्ति करें प्रभु पूजा मन में जब श्रद्धा और भक्ति।

सिद्धि प्राप्त होती भक्त को ऐसा करने पर प्रभु प्रसन्न अवश्य होते हैं ऐसे भक्त पर ।।


– [চাণক্য নীতি:-৮/১১]


অর্থাৎ, কাঠ, পাথর বা ধাতুর মূর্তিকে যদি ভগবানের অনুভূতি ও ভক্তি সহকারে পূজা করা হয়, তাহলে অবশ্যই সফলতা পাওয়া যাবে। ভগবান নিঃসন্দেহে এই ভক্তের প্রতি সন্তুষ্ট হন।



৯। অনুগামী শাস্ত্র থেকে প্রমাণ~


अव्यक्तं व्यक्तिमापन्नं मन्यन्ते मामबुद्धय: ।

परं भावमजानन्तो ममाव्ययमनुत्तमम् ॥

অব্যক্তং ব্যক্তিমাপন্নং মন্যন্তে মামবুদ্ধয়ঃ।

পরং ভাবমজানন্তো মমাব্যয়মনুত্তমম্॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭/২৪]

অর্থাৎ, “বুদ্ধিহীন মানুষেরা, যারা আমাকে জানে না, মনে করে যে, আমি পূর্বে অব্যক্ত নির্বিশেষ ছিলাম, এখন ব্যক্তিত্ব পরিগ্রহ করেছি। তাদের অজ্ঞতার ফলে তারা আমার অব্যয় ও সর্বোত্তম পরম ভাব সম্বন্ধে অবগত নয়।”


नाहं प्रकाश: सर्वस्य योगमायासमावृत: ।

मूढोऽयं नाभिजानाति लोको मामजमव्ययम् ॥

নাহং প্রকাশঃ সর্বস্য যোগমায়াসমাবৃতাঃ।

মূঢ়োহয়ং নাভিজানাতি লোকো মামজমব্যয়ম্॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭/২৫]

অর্থাৎ, “আমি মূঢ় ও বুদ্ধিহীন ব্যক্তিদের কাছে কখনো প্রকাশিত হই না। তাদের কাছে আমি আমার অন্তরঙ্গা শক্তি যোগমায়ার দ্বারা আবৃত থাকি। তাই, তারা আমার অজ ও অব্যয় স্বরূপকে জানতে পারে না।”


सुदुर्दर्शमिदं रूपं दृष्टवानसि यन्मम ।

देवा अप्यस्य रूपस्य नित्यं दर्शनकाङ्‍‍क्षिण: ॥

সুদুর্দর্শমিদং রূপং দৃষ্টবানসি যন্মম।

দেবা অপ্যস্য রূপস্য নিত্যং দর্শনকাক্সিক্ষণঃ॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১১/৫২]

অর্থাৎ, “পরমেশ্বর ভগবান বললেনÑ তুমি আমার যে রূপ এখন দেখছ তা অত্যন্ত দুর্লভ দর্শন। দেবতারাও এই রূপের সর্বদা দর্শনাকাক্সক্ষী। ”


एवं सततयुक्ता ये भक्तास्त्वां पर्युपासते ।

ये चाप्यक्षरमव्यक्तं तेषां के योगवित्तमा: ॥

এবং সততযুক্তা যে ভক্তাস্ত্বাং পর্যুপাসতে।

যে চাপ্যক্ষরমব্যক্তং তেষাং কে যোগবিত্তমাঃ॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১২/১]

অর্থাৎ, অর্জুন জিজ্ঞেস করলেন- “এভাবেই নিরন্তর ভক্তিযুক্ত হয়ে যেসমস্ত ভক্তেরা যথাযথ-ভাবে তোমার আরাধনা করেন এবং যাঁরা ইন্দ্রিয়াতীত অব্যক্ত ব্রহ্মের উপাসনা করেন, তাঁদের মধ্যে কারা শ্রেষ্ঠ যোগী।”


मय्यावेश्य मनो ये मां नित्ययुक्ता उपासते ।

श्रद्धया परयोपेतास्ते मे युक्ततमा मता: ॥

ময্যাবেশ্য মনো যে মাং নিত্যয়ুক্তা উপাসতে।

শ্রদ্ধয়া পরয়োপেতাস্তে মে যুক্ততমা মতাঃ॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১২/২]

অর্থাৎ, শ্রীভগবান বললেন- “যাঁরা তাঁদের মনকে আমার সবিশেষ রূপে নিবিষ্ট করেন এবং অপ্রাকৃত শ্রদ্ধা সহকারে নিরন্তর আমার উপাসনা করেন, আমার মতে তাঁরাই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী।”


क्ल‍ेशोऽधिकतरस्तेषामव्यक्तासक्तचेतसाम् ।

अव्यक्ता हि गतिर्दु:खं देहवद्भ‍िरवाप्यते ॥

ক্লেশোহধিকতরস্তেষামব্যক্তাসক্তচেতসাম্।

অব্যক্তা হি গতির্দুঃখং দেহবদ্ভিরবাপ্যতে॥

– [শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১২/৫]

অর্থাৎ, “যাদের মন ভগবানের অব্যক্ত নির্বিশেষ রূপের প্রতি আসক্ত, তাদের ক্লেশ অধিকতর। কারণ, অব্যক্তের উপাসনার ফলে দেহধারী জীবদের কেবল দুঃখই লাভ হয়।”


    [শ্রীশ্রী চণ্ডী:- ১৩/১০]- রাজা সুরথ এবং সমাধি বৈশ্য জগন্মাতার সম্যক দর্শনের আশায় দূর্গার মাটির মূর্তি গড়ে পূজা করেছিলেন।

 

“ন তস্য প্রতিমা অস্তি” –অপব্যাখ্যার সমাধান


যজুর্বেদে বলা হয়েছে- “ন তস্য প্রতিমা অস্তি” অর্থাৎ তাঁর কোন প্রতিমা নেই। তাহলে আমরা যে ভগবান বা বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিকৃতি নির্মাণ করে পূজা করি, সেটা কি ঠিক?


এটি যজুর্বেদের শ্লোক সত্য; কিন্তু এর যে অর্থ প্রচলন করা হয়েছে তা সঠিক নয়! সেটা ভুল! যাদের বেদ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা নেই এবং বৈদিক অভিধান যে ভালভাবে পড়েনি বা উপলব্ধি করেনি, তারা যজুর্বেদ আর শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের দুটি শ্লোকের মাঝখানের কিছু অংশ তুলে ধরে এর কদর্থ করে বলে, পরমেশ্বর ভগবানের কোন প্রতিকৃতি নেই।


প্রকৃতপক্ষে “প্রতিমা” একটি সংস্কৃত শব্দ। এ শব্দের অর্থ কি? সংস্কৃত “প্রতিমা” শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ‘প্রতিম’ থেকে এবং আ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে তার উচ্চারণ হয়েছে প্রতিমা। প্রতিম শব্দের অর্থ তুলনীয় যার থেকে প্রতিমা শব্দটি এসেছে। তাই “ন তস্য প্রতিমা অস্তি” শ্লোকাংশটির অর্থ হলো ‘তাঁর কোন তুলনা নেই।’ আরো স্পষ্টভাবে বললে ‘তাঁর তুল্য কেউ নেই।’ তিনি ‘অসমোর্ধ্ব’ তিনি অতুলনীয় বা তাঁর সমান কেউ নেই।


তবে বর্তমানে বাংলা ভাষায় (মোগল আমল থেকে প্রচেষ্টার ফল) প্রতিমা শব্দটির অর্থ প্রতিকৃতি করা হচ্ছে, যা ভুল এবং সুদূর পরিকল্পনার একটা অংশ মাত্র। তবে আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত। সেটা বর্তমান সময়ের শিক্ষিত যুবকসমাজকেই করতে হবে। আর একটা বিষয় জানা থাকা দরকার। সংস্কৃতে একই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ আছে। সেক্ষেত্রে ঐ শ্লোকের সামনে পিছনের অর্থ থেকে এর প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে আমাদের দেখতে হবে যে, কোন অর্থে সেটি ব্যবহৃত হয়েছ।


.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের পুরো শ্লোকটিতে বলা হয়েছে– “কেউ তাঁর আদি, মধ্য, অন্ত উপলব্ধি করতে পারে না। তিনি গ্রাহ্যাতীত বস্তু। তাঁর সমান কেউ নেই। তাঁর নাম অনন্ত মহিমাপূর্ণ।” কিন্তু জনৈক টিভি বক্তার কথায় প্রভাবিত হয়ে অনেকে শুধু মাঝের উক্তিটিই তুলে ধরে শ্লোকের অপব্যাখ্যা করছেন।


শুক্লযজুর্বেদে ৪০টি অধ্যায়। তার মধ্যে ৩২তম অধ্যায়টি উৎসর্গ করা হয়ছে বায়ু, সূর্য, চন্দ্র এবং অগ্নির উদ্দেশ্যে। সেখানে প্রশংসা করা হয়েছে বরুণ, বৃহস্পতি এবং ইন্দ্রের। সেখানে ভগবানের আকার নিয়ে কিছু বলা হয়নি।

সেখানকার ৩২/৩ শ্লোকটিতে বলা হয়ছে,


“ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহৎযশঃ

হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষা

যস্মান্ন জাত ইত্যেষঃ।।”

অর্থাৎ ভগবানের তুলনা দেয়ার কিছু নেই।

তাঁর মহৎ যশ আছে। ‘হিরণ্যগর্ভ’ ইত্যাদি,

‘তাঁর প্রতি অসূয়পরায়ণ হয়ো না’, ‘যা থেকে ইন্দ্র প্রভৃতি জাত, তিনি স্বরাট’ ইত্যাদি বাক্যে ভগবানকে বোঝানো হয়েছে।।


শ্লোকটিতে প্রকৃতপক্ষে বলা হয়েছে দেব-দেবীদের উৎস সম্পর্কে।


ভগবানের সাথে (তাঁর সৃষ্ট) দেব-দেবীদের কোনো তুলনা দেওয়া চলে না। তিনি সৃষ্টির আদি, তাঁর জন্ম নেই। কিন্তু বেদে কোথাও বলা হয়নি যে, ভগবানের প্রতিমা বা প্রতিকৃতি তৈরি করা যাবে না।


তাই শব্দের যথাযথ অর্থ না বুঝে না জেনে অর্ধকুক্কুটীর ন্যায় আংশিক অর্থ করে যারা শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা করছে, তাদের যথার্থ উত্তর দেওয়ার জন্য আমাদের বৈদিক শাস্ত্রের ব্যাখ্যা যথার্থ আচার্যের কাছ থেকে জানা অতীব জরুরি।


[ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই গবেষণামূলক লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত। ]


নিবেদক-

° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °


স্বধর্মম্

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ