পচেগলে দুর্গন্ধ বের হওয়ার আগে মনি কিশোরের খোঁজ কেউ করেনি- নারায়ণ দেবনাথ

মনি কিশোর মন্ডল
মনি কিশোর মন্ডল

ধর্ম রক্ষতি রক্ষতঃ


শিল্পী মনি কিশোর মন্ডল ধর্মান্তরিত হয়ে ধর্মকে অসম্মান করেছিলেন বলেই ধর্ম তাকে রক্ষা করেনি। যতক্ষণ পর্যন্ত না তার পচাগলা দেহের দুর্গন্ধ বের না হয়েছে ততক্ষন পর্যন্ত কেউ তার খোঁজ করেনি। ধর্ম ত্যাগের প্রায়শ্চিত্ত তাকে এই ধরাধামেই করে যেতে হয়েছে। এটাই ধর্মের বিচার।


ধর্মকে অসম্মান করে কাউকে ৩২ টুকরো হয়ে ডিপ ফ্রিজে কাটাতে হয়েছে, কাউকে শেষ বয়সে পেটের দায়ে না খেতে পেয়ে মুদির দোকান দিতে হয়েছে, কারও ক্ষেত্রে আবার প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পর ধর্মান্তরিত ধর্মও তার শেষকৃত্য করতে অস্বীকার করেছিলো। এটাই নিয়তি নির্বন্ধের খেলা।নিয়তিকে কেউ অস্বীকার করতে পারেনা।



গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন-


শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ। 

স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ।।৩৫।।


অর্থাৎ:  ধর্মকে অস্বীকার করলে তার ভয়াবহ পরিনতি ধর্মেরই বিধান। 


বাংলাদেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী মনি কিশোর ভালোবাসার টানে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছিলেন এক মুসলিম মহিলাকে। ভালোবাসার প্রতিদানে মনিকিশোর পেয়েছেন একটি দুর্গন্ধময় পচাগলা মৃতদেহ আর তার ভালোবাসার মানুষটির ভাগ্যে জুটেছে অশেষ ভোগবিলাস আর অনন্ত সুখের বিজয়োল্লাস কারণ ডিভোর্স দিয়ে তার প্রেমিকা এখন আমেরিকা প্রবাসী। 


শেষ জীবনে মনিকিশোর অনাদরে বিরহ কাতরতায় একাকিত্বে নিজেকে আলাদা করে ঢাকার রামপুরা টেলিভিশন সেন্টারের পিছনে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। শেষ জীবনে দেখার মতো তার কেউ ছিলো না। যে শিল্পী পাঁচ শয়ের অধিক গানে কন্ঠ দিয়েছেন ৩০টির বেশি এলবাম প্রকাশ করেছিলেন যার সবগুলোই ছিলো হিট গান। সেই শিল্পীর পচাগলা মৃতদেহের দুর্গন্ধ বের হওয়ার আগে কেউ তার খোঁজ করেনি। একজন শিল্পির জীবনে এরচেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারেনা।


ঠিক একই ভাবে বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার প:বঙ্গের কমল দাসগুপ্ত ভালোবেসে  ফিরোজা বেগমকে বিয়ে করে দেশ ছেড়ে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। তার একটি বিখ্যাত গান,


ভালোবাসা মোরে ভিখারি করেছে তোমারে করেছে রানী, তোমারই দুয়ারে কুড়াতে এসেছি ফেলে দেয়া মালাখানি।


কমল দাসগুপ্ত ঢাকায় এসে তার সুর করা গানেরই বিষয়বস্তু হয়ে গিয়েছিলেন।ঢাকায় কেউ তাকে পাত্তাই দেয়নি। অথচ প:বঙ্গ থাকাকালীন এই সুরকার কবি নজরুলের অন্তত ৪০০টি গানে সুর দিয়েছিলেন। যা আজও কিংবদন্তি সুরের মূর্ছনায় সুরের জগৎ আন্দোলিত হয়। সেই কমল দাসগুপ্তের নাম যশ খ্যাতি ধর্মের কালান্তরে মুছে গিয়েছে। তাকে এখন আর কেউ মনেও করে না।


দাঁড়াও পথিক বর জন্ম যদি তব বঙ্গে। তিষ্ঠ ক্ষনকাল।এ সমাধিস্থলে মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত দত্ত কুলোদ্ভব কবি মধুসূদন দত্ত। 


কবি মধুসূদন দত্ত আজও বাংলা সাহিত্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। জীবনের নানান উত্থান- পতনের মতোই তার শেষ জীবন তার মৃত্যু ছিলো গভীর বেদনার। তিনি বিয়ে করেছিলেন এক খ্রিস্টান মহিলাকে। তার এই ধর্মান্তর আর্যসমাজ ভালো ভাবে নেয়নি। তার দেশত্যাগ আবার ফিরে আসার মধ্যে যে দেশের টান তা ধর্মকে অতিক্রম করতে পারেনি। তার শেষ জীবন ছিলো অর্থকষ্ট অনাহার অপুষ্টি অর্ধাহারে এক বিভীষিকাময়। মৃত্যুর পর তার সাধের খ্রিস্টান ধর্ম তার শেষকৃত্য করতে অস্বীকার করেছিলো। শেষ পর্যন্ত খ্রিষ্টানদের মৃতাবস্থায় নাম রেজিস্ট্রার করার নিয়ম না মেনে অচ্যুত অবস্থায় তার শেষকৃত্য হয়েছিলো।


সনাতন ধর্মের সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভেবে যারাই ধর্মান্তরিত হয়েছে তাদের জীবনেই নেমে এসেছে অমানিশার ঘোর অন্ধকার।


সূত্র: ফেসবুক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ