কিশোরগঞ্জে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর

  

কিশোরগঞ্জে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর


Daily Inqilab কিশোরগঞ্জ থেকে, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। উৎসবকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুতি শেষের পথে। সেই প্রস্তুতির মাঝেই কিশোরগঞ্জে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভোরে কিশোরগঞ্জ শহরতলীর বত্রিশ এলাকার শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়া মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে ।


বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে কিশোরগঞ্জে রাতভর হিন্দু-মুসলিম মিলে শহরের সব মন্দির, আখড়া পাহারা দেওয়া শুরু করে। জেলায় ৩৬৩টি মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম বারেরমতো বছর গোপীনাথ জিউর আখড়ায় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। রাতভর নিরাপত্তার কারণে আখড়ায় স্থানীয় গোপীনাথ সংঘ সংগঠনের ছেলেরা মন্দির পাহারায় ছিলেন। রাত ৩টা পর্যন্ত সংগঠনের পাঁচ সদস্য সজাগ ছিলেন। ভোরের দিকে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় কে বা কারা মন্দিরে প্রবেশ করে সব প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। পরে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলে প্রশাসন ঐ আখড়া পরিদর্শন করেন।


স্থানীয় পূজারীরা জানায়, 

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য ন্যক্কারজনক এ কাজ করা হয়েছে। ভোরের দিকে সব মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা এখন পূজা করার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। এই মন্দিরে এমন কোনো ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবসময় সব পূজা এ মন্দিরে করা হয়। এবারই দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ দেশে আমরা তো সবাই একত্রে বসবাস করি। এমন কেন হবে? আমরা কিশোরগঞ্জে সবাই একত্রে যার যার ধর্ম তারা তার তার মতো করে পালন করি। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।


গোপীনাথ জিউর আখড়ার দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজিব কুমার সাহা বলেন, দুমাস ধরে আমরা এ মন্দির পাহারা দিচ্ছি। প্রতিদিন রাতে ৫-৭ মিলে পাহারা দেই। এ বছর প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই অনুযায়ী পূজার আয়োজন করা হয়। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। এখন শুধু রঙ করা ও সাজানোর বাকি ছিল। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে সব প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের যারা পাহারায় থাকেন তারা রাত ৩টা পর্যন্ত জেগে ছিলেন। একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ে কে বা কারা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। ঢের পাওয়া যায়নি।


জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নারায়ণ দত্ত প্রদ্বীপ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা পূজা সুন্দরভাবে করতে চাই। তদন্ত সাপেক্ষে যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছি। মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও মন্দিরের পাশের ক্যামেরাগুলো দেখে কারা প্রতিমা ভাঙচুর করেছে তাদের শনাক্ত করার জন্য বলেছি। ঘটনার পরপর জেলা প্রশাসন সকালে মন্দির পরিদর্শন করেছেন। দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে এবক জরুরী সভা হয়েছে।


পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মন্দির পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রতিটি মন্দিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। দুর্গাপূজা উৎসব যেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় সেইভাবে কাজ করা হচ্ছে।



# Daily Inqilab

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ