ফরিদপুরে লালন আনন্দধামে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

ফরিদপুরের ভাঙ্গা লালন আনন্দধামে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের ভাঙ্গা লালন আনন্দধামে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর, প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ২৬


ফরিদপুরের ভাঙ্গায় লালন আনন্দধামে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লালন আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ জাহিদ হাসান (৪২) এ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।


ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, 


তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে, তা খুঁজে বের করার জন্য ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অমিয় চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভাঙ্গার মোটরা গ্রামে অবস্থিত লালন আনন্দধামের সীমানাপ্রাচীর টপকে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে। তারা ভেতরে ঢুকে লালন ফকিরের ছবি, বেশ কিছু মূল্যবান গ্রন্থ ও জার্নাল, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটারসহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়। ভাঙচুর করা হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য।


২০১৩ সালে কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে ৫১ শতাংশ জমির ওপর এ লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ জাহিদ হাসান। তিনি সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এই আনন্দধামে নিয়মিত পাঠচক্র, লোকসাহিত্য নিয়ে গবেষণাসহ লোকগান ও লালন সংগীত, রবীন্দ্র-নজরুল-জসীমউদ্‌দীনের জন্মজয়ন্তী পালনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। এসব আসরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা সমবেত হতেন।


পুড়ে যাওয়া বই–জার্নাল, ছবি: সংগৃহীত
পুড়ে যাওয়া বই–জার্নাল, ছবি: সংগৃহীত

 


ভাঙ্গা থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে সৈয়দ জাহিদ হাসান উল্লেখ করেন,


‘আমি ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি ভাঙ্গা থানাধীন কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করি। ওই আনন্দধাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার কিছু উচ্ছৃঙ্খল, বখাটে, মৌলবাদী মনোভাবাপন্ন তরুণ আমার বিরোধিতা শুরু করে এবং তারা ওই আনন্দধাম উৎখাতসহ আমার ক্ষতি করার মানসে বিভিন্ন হুমকি প্রদানসহ সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটায় সারা দেশব্যাপী মাজারে হামলার প্রতিবাদে আনন্দধামে বাউল সংগীত অনুষ্ঠান আয়োজন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে “আবনায়ে দারুস সুন্নাহ কাউলীবেড়া” নামের ফেসবুক গ্রুপে এক ব্যক্তি লালন আনন্দধামকে “শিরকি আস্তানা” অভিহিত করে উত্তেজনাকর পোস্ট দেন। ওই ফেসবুক পোস্টে অনেকেই হামলার জন্য উত্তেজনাকর মন্তব্য করেন।’



সূত্র: প্রথম আলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ