![]() |
ছবি: সংগৃহীত |
সমকাল প্রতিবেদক, প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪ | ০২:০৭
দেশে গত এক বছরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা-নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪৫টি। এসব ঘটনায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ৪৫ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এ তথ্য জানায়। সংবাদ সম্মেলনে গত বছর দেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতন-নিপীড়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত গণমাধ্যমে আসা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। মরদেহ উদ্ধার (হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান) হয়েছে ৭ জনের। হত্যার চেষ্টা হয়েছে ১০ জনকে। হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৩৬ জনকে। হামলা/শারীরিক নির্যাতন/জখম হয়েছে ৪৭৯ জন। চাঁদা দাবি করা হয়েছে ১১ জনের কাছে। বসতঘর/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা/ভাঙচুর/লুটপাট/অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১০২টি। বসতবাড়ি/জমিজমা দখলের ঘটনা ঘটেছে ৪৭টি। বসতবাড়ি/জমিজমা দখলের/উচ্ছেদের তৎপরতা ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। দেশত্যাগের হুমকি/বাধ্য করার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ১১টি। দেবোত্তর/মন্দির/গির্জার সম্পত্তি দখল ও দখলের চেষ্টার ঘটনা হয়েছে ১৫টি। শ্মশানভূমি দখল/দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ৭টি। মন্দিরে হামলা/ভাঙচুর/লুটপাট/অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১৪টি। প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে ৪০টি। দলবদ্ধ ধর্ষণ/ধর্ষণ/ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫টি। অপহরণ/নিখোঁজ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের ঘটনা ঘটেছে ১২টি। ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে আটক হয়েছেন ৮ জন। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩২টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৫টি। এছাড়া অন্যান্য ঘটনা ঘটেছে ১৪টি।
সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনাকে প্রকৃত সংগঠিত ঘটনার আংশিকমাত্র বলে উল্লেখ করেন রাণা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তুলনামূলক পর্যালোচনায় দেখা যায়, সহিংসতার ঘটনার খুব বেশি হেরফের আজও হয়নি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু ছিল প্রায় ১৯ শতাংশ। এখন তা ৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার পরিবেশ একেবারেই সংকুচিত করা হয়েছে। পুলিশি প্রহরায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে।’ বগুড়ার রথযাত্রায় পূণ্যার্থীদের মৃত্যুতে রাণা দাশগুপ্ত শোক প্রকাশ করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ ও ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক শুভ্র দেব কর প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক দিপংকর ঘোষ।
সূত্র: সমকাল
0 Comments