সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হয়রানি করা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে: সুলতানা কামাল

সিলেটে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। শনিবার নগরের বন্দরবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয়, ছবি: প্রথম আলো
সিলেটে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। শনিবার নগরের বন্দরবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয়, ছবি: প্রথম আলো

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট, প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ২৩


বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে হয়রানি ও হেয় করা সামাজিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। 

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সুলতানা কামাল বলেন, 

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন তুলনামূলকভাবে বেশি হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহারও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বেশি দেখা যায়। রাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। রাষ্ট্রকেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরও বলেন, 

‘আগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কারও ওপর আক্রমণ হলে অন্যরা প্রতিবাদ করে এগিয়ে আসতেন। এখন সেটি তেমন একটা দেখা যায় না। আর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ তো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চেয়েও সংখ্যালঘু। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে আর আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি টার্গেট করে দখল করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাঁরা হয়রানি হচ্ছেন। এগুলো ঠেকাতে হবে।’

সিলেট জেলা হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্কের ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির সদস্যসচিব লক্ষ্মীকান্ত সিংহ। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের হার বেড়ে যাওয়ায় সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কথা বলে দেশের নিরীহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর যেভাবে অন্যায়-অত্যাচার করা হচ্ছে, সেটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এটা ঠেকাতে সরকারের দায়িত্বশীল বিভাগকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির, আইনজীবী সৈয়দা শিরীন আক্তার, মনির হেলাল ও রেজাউল করিম খান, শাবিপ্রবির সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল হোসাইনী, আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা মিলন ওঁরাও, উপাধ্যক্ষ সুবল চন্দ্র দাশ, উন্নয়নকর্মী নাজিম উদ্দিন, সাংবাদিক ফয়সল আহমদ, বিলকিস আক্তার সুমি ও মনিকা ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সূত্র: প্রথমআলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ