না! আমি ধর্মত্যাগ করবো না?

না! আমি ধর্মত্যাগ করবো না?

ধর্ম অপরিত্যাজ্য ও অপরিবর্তনীয়। এ জগৎে প্রত্যেক বস্তুরই নিজস্ব ধর্ম রয়েছে। সেরূপ, মনুষ্যেরও ধর্মও রয়েছে। যা সনাতন অর্থাৎ যা ছিলো, আছে, থাকবে । অগ্নি যেমন তাহার দগ্ধ করার ধর্ম পরিবর্তন করে শীতল হতে পারে না, জল যেমন তার তরলত্ব পরিত্যাগ করে কঠিনত্বকে ধারণ করতে পারে না। তবে মনুষ্যই কি করে পারে তাহার ধর্ম পরিবর্তন করতে? না! সত্যি মনুষ্য ধর্ম পরিবর্তন করতে পারে না বরং ধর্মচ্যুত হয়ে অধার্মিক হয়ে উঠতে পারে । প্রলোভন, লালসা কিংবা ভয়ভীতিতে ধর্ম ত্যাগ করা ম্লেচ্ছের লক্ষণ ধার্মিকের নয়। সেজন্য, আমি ধর্মত্যাগ করবো না?


• কারণ! জগৎ ধর্ম এক এবং সনাতন। সনাতন ধর্ম দিব্য, অর্থাৎ অপৌরুষেয় এবং যুগপৎভাবে সনাতন ধর্ম সত্য । ধর্মের সহিত Religion বা ism এর পার্থক্য সমুদ্রসম । Religion বা ism নির্দিষ্ট কিছু আচার অনুষ্ঠান নিয়ম কানুনের সমষ্টিগত সাংস্কৃতিক, ভৌগলিক ও রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা জীবনব্যবস্থা।


• সনাতন ধর্মই একমাত্র জাতিবর্ণনির্বিশেষে সকলকে মনুষ্য হওয়ার উপদেশ প্রদান করে । পবিত্র বেদ এর অমর বাণী- 


"মনুভব জনয়া দৈবং জনম্" - ঋগ্বেদ, ১০/৫৩/৬। 


অর্থাৎ, প্রকৃত মানুষ হও এবং অন্যকেও মানুষ হিসেবে গড়ে তোল ।


• সনাতন ধর্মই নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে আসীন করে। নারীকে গৃহবন্দী কিংবা ভোগবস্তু হিসেবে নয় বরং গৃহে শোভাবর্ধনকারীনী, শাসক, সম্রাজ্ঞী, জ্ঞানের ধারক হিসেবে সম্মান প্রদর্শন করে । [ঋগ্বেদ ১/১২৬/৭,অথর্ববেদ--৩/২৮/৩]


• সনাতনধর্ম প্রতিটি প্রাণী মাত্রেরই সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে। শুধু নিজস্ব জাতির মঙ্গল এমন সংকীর্ণ ধারনার অবসান করে, সমগ্র জগৎ এর শান্তি কামনা করার উপদেশ দেয়। শান্তি পাঠ :-


"ওতম্ সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ, সর্বে সন্তু নিরাময়াঃ।সর্বে ভদ্রাণি পশ্যন্তু, মা কশ্চিৎ দুঃখভাগভবেৎ। ওতম্ শান্তিঃ ওতম্ শান্তিঃ ওতম শান্তিঃ"


অর্থাৎ, জগতের সবাই যেন সুখী হয়, সকলে যেন নিরাময় হয়, সকল মানুষ পরম শান্তি লাভ করুক, কশ্মিনকালেও যেন কেহ দুঃখ বোধ না করেন। ঈশ্বর আমাদেরকে আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক এই তিন প্রকার দুঃখ হতে শান্তি প্রদান করুন।


‍~*~*~*~*~*~


সনাতন ধর্ম কোনো জাতিবিদ্বেষী আধিপত্য কিংবা অপর বিশ্বাসের প্রতি ঘৃণা কিংবা বিদ্বেষ এর শিক্ষা দেয় না। বরং, কালো হোক বা সাদা, নারী হোক বা পুরুষ, সবল কিংবা নির্বল সকলকে মিত্রের দৃষ্টিতে দেখার উদার দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে। 


"মিত্রস্যাহং চক্ষুষা সর্বাণি ভূতানি সমীক্ষে" - যজুর্বেদ ৩৬/১৮ 


অর্থাৎ, সকল জীবকে মিত্রের চোখে দেখবে ।


ঈশ্বর যে অবিনশ্বর নিয়মে এই মহাবিশ্ব তথা প্রকৃতি সৃষ্টি করেছেন, বিজ্ঞান সে নিয়মেরই অনুসন্ধান করে । সনাতন ধর্ম সত্য ও শাশ্বত তাই অপৌরুষেয় গ্রন্থ পবিত্র বেদ এ বিজ্ঞানের বহু কালজয়ী তত্ত্বের উপস্থিতি রয়েছে । গণিত, সংগীত, ভূবিদ্যা, দর্শন কিংবা জ্যোতির্বিজ্ঞান এর অবিচল উপস্থিতি রয়েছে। বৈশেষিক দর্শনে বলেছে- 


“বুদ্ধি পূর্বা বাক্য কৃতা বেদে” 


অর্থাৎ বেদের বাক্য বুদ্ধিপূর্বক। 


পবিত্র বেদ এ রয়েছে,


সৃষ্টিতত্ত্ব, সৌরকেন্দ্রিক তত্ত্ব, Big Crunch Theory, সালোকসংশ্লেষণ এর ধারণা, সূর্যগ্রহণ, সপ্তরশ্মি, জলচক্র, বিমানবিদ্যাসহ বহু কালজয়ী বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব।


वेद VEDA

সৌজন্য: Beauty of veda blogspot.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ