বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ও মিছিল |
Anweshan Desk, ১২ জুন ২০২৩, ১৫:১২ পিএম
ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ ওঠায় ১০ জুন শনিবার ২৫ বছর বয়সী এক হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার ঘাগড়া খিলমোগুল গ্রামের বিপ্লব কান্তি দাসের ছেলে দয়াল হরি প্রকাশ জনি দাসকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে নিজের ফেসবুক স্টোরিতে একটি ছবি পোস্ট করেন দাস, যাতে দেখা যাচ্ছে তাঁর দেহের নিচের অংশে কাবা শরিফ ও কুরানের ছবি ফটোশফের মাধ্যমে আটকে দেয়া হয়েছে। পোস্টটি দেখে স্থানীয় ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ক্ষিপ্ত হয়ে একই এলাকার একটি দোকানে দাসকে আটকে রাখে। এ সময়ে তাকে মারধোর ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী কিছুক্ষণ পরেই তা ডিলিট করেন এবং পোস্ট করে জানান যে এটি ভুলে চাপ পড়ে হয়ে গেছে৷ তিনি ইচ্ছেকৃত এই কাজ করেননি এবং তিনি সবাইকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।
রাঙ্গুনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঈন উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি মামলাটি তদন্ত করে দেখছেন।
২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অস্পষ্ট বিধানের জন্য মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং সাংবাদিকদের দ্বারা এই আইনটি ইতিপূর্বে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে, যা ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করতে এবং সংখ্যালঘুদের হয়রানি করতে ব্যবহার করার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষার পক্ষে কাজ করে এমন একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল ১৯-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে এই আইনের অধীনে কমপক্ষে ১৯৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার ফলে ৪৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং হেফাজতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, এই আইনের মাধ্যমে দায়ের করা ৩৪ শতাংশ মামলা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এবং ১১ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে।
দয়াল হরি দাসের গ্রেফতার বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে একটি উদ্বেগজনক ঘটনা। এ ঘটনা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপদ এবং সরকারের এটি বাতিল করার প্রয়োজনীয়তার কথা স্পষ্টভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়।
সোর্স: anweshan.news
0 মন্তব্যসমূহ