স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানের অংশগ্রহণ? দালাল ছাড়া কেউ এ কথা বলবে না



👇বুদ্ধিজীবীদের প্রতি জবাব


লেখক মাননীয় তপন ঘোষ


      আগেই বলেছি অন্ধের কাছে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য্যের বর্ণনা শুনবো না।  রিফিউজীর কাছে শুনব না মুসলমান কত ভালো ------- । 


  ওপার বাংলায় ফিরে যাও নিজের পরিবারের মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে।  ওখানে ছয় মাস বসবাস করো । তারপর বল , মুসলমান কত ভালো ------


  আর স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানের অংশগ্রহণ?  দালাল ছাড়া কেউ এ কথা বলবে না - - - - 

  

   পরাধীন যুক্ত বাংলায় ৫৪% মুসলিম আর ৪৬ % হিন্দু ছিল।   বঙ্গপ্রদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সংখ্যালঘু প্রদেশ ছিল । 

তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামে উভয়ে অংশগ্রহণ করলে — শহীদ হওয়া এবং এবং জেলে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম বেশি হিন্দু কম হওয়া উচিত ছিল । ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকী থেকে বাংলায় যে শহীদ হওয়ার পরম্পরা শুরু হয়েছিল তাতে কতজন মুসলিম স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিয়ে ব্রিটিশের গুলিতে বা ফাঁসিতে শহীদ হয়েছিল ?  মোট শহীদ সংখ্যার ৫৪% কি  ? আন্দামানে সেলুলার জেলে কয়জন মুসলিম গিয়েছিল ?  মোট কারাবাসীদেরর ৫৪% কি ? 


   পূর্ববঙ্গীয় মার্কসবাদীরা যুক্তি দেয় ,  মুসলিমরা তো শিক্ষায় পিছিয়ে ছিল ।  তার উপর হিন্দু বিপ্লবীরা কালীপুজো-টুজো করতো ।  গীতা পড়তো ।  তাই মুসলমানরা তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেনি । 


    আচ্ছা হিন্দুরা পুজো টুজো করে । তা মুসলিমরা আল্লা-আল্লা করে নামাজ-টামাজ পড়ে একটা আলাদা বিপ্লবী সংগঠন করে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করল না কেন ? 


তারাই তো ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ ।  ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রথম দায়িত্ব তো তাদেরই ছিল । করল না কেন ?  লেখাপড়ায় পিছিয়ে ছিল বলে ? কেন পিছিয়ে ছিল ?ইংরেজ আসার আগে  ৫০০ বছর বাংলায় তারাই রাজত্ব করেছে ।  সেই ৫০০ বছর ধরে হিন্দুরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে , ধর্ম বাঁচাতে , আর তাদের লালসা থেকে পরিবারের নারীদের ইজ্জত বাঁচাতে ত্রাহি ত্রাহি করত ।   তাই হিন্দুরা তো লেখাপড়ায় পিছিয়ে গিয়েছিল  । শাসক মুসলিমদের তো লেখাপড়ায় অনেক এগিয়ে থাকার কথা ।  তারা পিছিয়ে পড়লো কেন ?  সেজন্য তারা দায়ী না হিন্দুরা ?  তাই সবাই জানে ওরা কেন পিছিয়ে পড়েছিল । চারটে করে বিয়ে করে১৫/২০টা বাচ্চা পয়দা করলে সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া যায় না । তার উপর ওদের কাছে লেখাপড়ার থেকে নামাজ-রোজা-হজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ । বাংলা ও ইংরেজী শব্দের আরবী ভাষা প্রিয় । এসবেরই পরিণাম শিক্ষায় পিছিয়ে যাওয়া ।  এরজন্য অন্যকে দায়ী করা কেন ? 


  আচ্ছা ,  ঠিক আছে ,  ওরা শিক্ষায় পিছিয়ে ছিল । তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামে ওদের অংশগ্রহণ না হয় কিছুটা কম হবে ।  শূন্য তো হওয়ার কথা নয় । সুতরাং মোট শহীদের মধ্যে ওদের সংখ্যা ৫৪% হবে না ।  কিছুটা কম হবে ।  অর্ধেক হোক ২৭% , আরো কম করে ধরলে ২০% হোক ।  ১০% হোক ।  কই ? একজনও বাংলার মুসলমান শহীদের নাম বলুন ।  পারবেন না ।  যুক্তবঙ্গের প্রায় ৩০০ শহীদের একজন মুসলমান শহীদ নেই ।  কেন নেই ? এ প্রশ্ন উঠবে না ? নিশ্চয়  উঠবে । 


   বিশ্ববরেণ্য বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন এর বাহিনীতে দেড়শ জন সদস্য ছিল ,  যারা দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করতে এগিয়ে এসেছিল ।  সেই সময় ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামে হিন্দু ছিল ২০% , মুসলিম ছিল ৮০%  , অথচ মাস্টারদার বিপ্লবী বাহিনীর ১৫০ সদস্যই এসেছিল ওই  ২০% হিন্দুদের মধ্যে থেকে ।  ৮০% মুসলিমদের মধ্যে থেকে একজনও বিপ্লবী যোগাড় করতে পারেন নি ।  কেন ?


 নাকি মাস্টারদা আরএসএস স্কুলে পড়ে হিন্দু সাম্প্রদায়িক হয়ে গিয়েছিলেন ?  তাই তিনি ইচ্ছা করে মুসলিমদেরকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন ? 


এসব প্রশ্নের উত্তর আমাদের চাই । 


  পাঞ্জাবেও একই অবস্থা ।  পরাধীন ভারতে পাঞ্জাব ও বাংলা এই দুটো প্রদেশ থেকেই সব থেকে বেশি শহীদ হয়ে ছিল ।  আবার এই দুটি  প্রদেশেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল ।  অথচ এই দুটি প্রদেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মধ্যে থেকে একজনও শহীদ হয়নি ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে ।  সমস্ত শহীদ হয়েছে সংখ্যালঘু হিন্দু ও শিখদের মধ্যে থেকে । 


  একজন মাত্র বাঙালি অথবা পাঞ্জাবী মুসলমান শহীদের নাম বলুন ।  কেউ জানে ?কেউ জানে না ।  তাহলে কি প্রমাণিত হল ?

 হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াই লড়েছে ? 


আর কতদিন এই মিথ্যা চলতে দেওয়া হবে ?


  একটা প্রয়োজনীয় তথ্য মনে রাখা দরকার । মুসলমানরা লেখাপড়ায় পিছিয়ে ছিল ঠিকই , কিন্তু তাই বলে তাদের রাজনৈতিক জ্ঞান বা সচেতনতা কম ছিল ? স্বাধীনতার আগে দুবার  ( ১৯৩৭  ,১৯৪৬ ) নির্বাচন হয়েছিল এবং মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল ।  মোট তিন জন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিল ।  তা হিন্দুরা শিক্ষায় এত এগিয়ে ছিল ,  এত ডাক্তার-উকিল-ব্যারিস্টার-শিল্পী-সাহিত্যিক-জমিদার-রায় বাহাদুর নেতা— সব হিন্দুরা ছিল , কিন্তু তিন জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে একজনও হিন্দু মুখ্যমন্ত্রী হলো না কেন ? পাঞ্জাবেও তাই । বাংলায় তিন জন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমুদ্দিন , ফজলুল হক এবং সুরাবর্দী ।  

শিক্ষায় যতই পিছিয়ে থাক ,  স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে যতই দূরে সরে থাক ,  মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে কোনো অমুসলমানকে মুখ্যমন্ত্রী তারা মেনে নেবে না ।  তাহলে রাজনীতি সচেতনতার কোন ঘাটতি ছিল ? 


 ও— শুধু শহীদ হওয়ার সময় , জেলে যাওয়ার সময় , আন্দামান জেলে যাওয়ার সময় ওদের সচেতনতার অভাব নজরে পড়ে ? মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার সময় সচেতনতার অভাব হয় না  ? 


  এই ছেঁদো যুক্তি আর কতদিন চলবে  ? 


  স্বাধীনতার জন্য ওরা লড়াই করল না , প্রাণ দিল না , রক্ত দিল না , জেল খাটলো না ।  কিন্তু হিন্দুর প্রাণ ও রক্তের মূল্যে স্বাধীনতা যখন আসন্ন ,  তখন ওরা ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ল ভাগ আদায় করার জন্য  । হিস্যা বুঝে নেওয়ার জন্য । তখন সচেতনতার অভাব  হল না ।  তারা স্লোগান দিল, “ আগে পাকিস্তান দিতে হবে তবেই ভারত স্বাধীন হবে ,”  “ লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান ” , “ নারায়ে তকবীর  আল্লাহু আকবার  ” । শুধু স্লোগান দিল না ।  ছুরি বের করল , পিস্তল বের করল ,  সারা দেশে দাঙ্গা করল ।  হিন্দু গণহত্যা করল ।  পাকিস্তানের দাবীতে । শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান আদায় করে নিল । 


  স্বাধীনতা আন্দোলনে এক বিন্দু রক্ত ঝরালো না  কিন্তু পাকিস্তান আদায় করার জন্য হিন্দুর রক্তের নদী বইয়ে দিল ,  হিন্দু-শিখের । 

  তাহলে স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দু মুসলমানর একসঙ্গে লড়াই চিত্রটা পরিষ্কার হল ?

যোগাড়িত

https://www.facebook.com/groups/4182602401806539/posts/6883155775084508/

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ