মুসলিম থেকে উদ্ধার গান্ধীজীর বড় ছেলে হরিলাল গান্ধী

মুসলিম থেকে উদ্ধার গান্ধীজীর বড় ছেলে হরিলাল গান্ধী


গান্ধীজীর বড় ছেলে হরিলাল গান্ধী ২৭ শে জুন ১৯৩৬ সালে নাগপুরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৩৬ সালের ২৯ শে জুন মুম্বাইয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি হরিলাল গান্ধী থেকে আব্দুল্লাহ হয়েছেন।


এ ঘোষণায় গান্ধীজী কোন রকম কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি কিন্তু মাতা কস্তুরবার পায়ের নিচে মাটি ছিল না।গান্ধীজীর কিছু করতে না দেখে মাতা কস্তুরবা গান্ধীজীর কাছে আবেদন করেছিলেন যে, তিনি যেন মুসলিম হওয়া পুত্রকে সনাতন ধর্মের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। গান্ধীজীর প্রতিউত্তরে বলেন এটি অসম্ভব। যদি তার পুত্র ইসলাম ধর্ম স্বীকার করে নেন তবে তাতে ক্ষতি কি? এবং আমি স্বয়ং এর বিরোধী। যখন আর্য সমাজের স্বামী শ্রদ্ধানন্দজি মুসলমান রাজপুতদের শুদ্ধি আন্দোলনের মাধ্যমে সনাতন ধর্মে ফিরিয়ে আনছিলেন তখন আমি এর বিরোধী ছিলাম। শুদ্ধি আন্দোলন কে থামানোর জন্য আমি বিনোবা ভাবেকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম, বিনোবা ভাবে কেবল আমার নির্দেশে অনশন ধর্মঘট করে আর্য সমাজের শুদ্ধি আন্দোলন বিরোধিতা করেছিল।


তোমার এবং তোমার ছেলের অপকর্মের জন্য আমি লজ্জিত, একথা বলে মাতা কস্তুরবা গৃহত্যাগ করেন। কিন্তু কেউ মাতার আর্তনাদ শোনেনি। হোঁচট খেতে খেতে মাতা কস্তুরবা মুম্বাইয়ের আর্য সমাজী শঙ্কর ভট্টের নিকট পৌঁছে আঁচল পেতে চিৎকার করে বলেন যে, আমার মত দুর্ভাগ্য নারীর আপনার দ্বার থেকে কিছু ভিক্ষা পাব কি? 


বিজয় শঙ্কর ভট্ট জিজ্ঞাসা করলেন মা আপনি কী চান ??


মাতা কস্তুরবা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমার পুত্রকে ফিরিয়ে দাও, যে ধর্মবিরোধীদের খপ্পরে জড়িয়ে পড়েছে।


বিজয় শঙ্কর ভট্ট বলেছিলেন, "মা, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।" আপনি অবশ্যই এই ভিক্ষা পাবেন।


কিন্তু মাতা কস্তুরবা বললেন ঠিক আছে, কিন্তু যতক্ষণ না আমার পুত্র ফিরে আসছে ততক্ষণ আমি এখানেই থাকব।


শ্রী বিজয় শঙ্কর ভট্ট আব্দুল্লাহকে “ ইসলাম খন্ডন এবং বেদের শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়ে দুটি বক্তৃতা শুনিয়েছিলে” যেটি শুনে আব্দুল্লাহর আত্মগ্লানি হয়েছিল যে, সে কেন মুসলিম হয়েছে? তারপরে তিনি আবদুল্লাহকে মহর্ষি দয়ানন্দজীর রচিত সত্যার্থ প্রকাশ বইটি পড়তে দিয়েছিলেন। 


এর প্রভাবে এমন ছিল যে, মুম্বাইয়ের উন্মুক্ত মাঠে হাজার হাজার মানুষের সামনে আর্য সমাজ তার ভাই এবং তার মা কস্তুরবা এর সামনে আব্দুল্লাহকে শুদ্ধ করে পুনরায় বৈদিক ধর্মে দীক্ষিত করে হীরালাল গান্ধী করে তুলেছিলেন। মাতা কস্তুরবা আর্য সমাজ কে অসংখ্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।


গান্ধীজি যখন আবদুল্লাহর হিন্দু ধর্মে ফিরে আসার বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছিলেন যে তাঁর পুত্র আবার কাফির হয়ে গেছে। গান্ধী মাতা কস্তুরবাকেও  অনেক তিরস্কার করলেন যে মাতা কস্তুরবা কেন আর্য সমাজের আশ্রয়ে গেলেন?


আর এই প্রকার জীবনভর আর্য সমাজের শুদ্ধিকরণ আন্দোলনের বিরোধিতাকারী গান্ধীজীর পরিবারকে আর্য সমাজ শুদ্ধি করে দিল আর গান্ধীজী হাত ঘষতে থাকলেন। সম্ভবত এই কারণেই গান্ধীজীর আসল পরিবার সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয় না।


লেখক: অশ্বিনী কুমার


https://www.facebook.com/Hypocritebengalibabu.in/posts/pfbid02SWgqhv2149WAzTtY7QEs5XuaGAbNrbJcGoqzDRUj3vrM48baRWAzRJXaDYB7axfMl

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ