বেগমগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল, ফেনীতে সংঘর্ষ

বেগমগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল, ফেনীতে সংঘর্ষ

সমকাল ডেস্ক, প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২১ । ২৩:৩২ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২১ । ২৩:৪১


নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে শনিবার সকালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের পর নোয়াখালী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ মিছিল হয়। এদিকে কুমিল্লার ঘটনার জেরে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পথচারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।


এর আগে সকালে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌর এলাকায় ইসকন মন্দিরের পুকুর থেকে প্রান্ত দাসের (৩০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি মন্দিরের সেবক ছিলেন। তার বাড়ি চাটখিল উপজেলার সাহাপুর এলাকায়।


উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় র‌্যাব-বিজিবিসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় ব্রহ্ম দাস, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রস প্রিয় দাস, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আনম সেলিম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন ডিআইজি।


নোয়াখালী পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কিশোর চন্দ্র শীল জানান, সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকালেই বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল, ডিআইজি, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের মতবিনিময় হয়।


কুমিল্লার ঘটনার জেরে শুক্রবার বেগমগঞ্জের চৌমুহনী বাজারের কয়েকটি মন্দির ও মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর স্থানীয় প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভোর ৫টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নোয়াখালীর সভাপতি বিশ্বজিৎ সূত্রধর অভিযোগ করেন, ওই হামলায় প্রান্ত দাসের মৃত্যু হয়। তার মরদেহ উদ্ধারের পর দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপতাল মর্গে পাঠানো হয়।


এদিকে কুমিল্লার ঘটনার জেরে শনিবার ফেনী শহরের বড় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এটি ট্রাঙ্ক রোডে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এ ঘটনায় শহরের বড় বাজার, ট্রাঙ্ক রোড ও পাঁচগাছিয়া সড়কের সব দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।


মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের দানিয়াপাড়া মহাশ্মশান কালীমন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া বরিশালের গৌরনদীতে তিনটি মন্দির ও একটি বসতঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ধুরিয়াইল কাজিরপাড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। বান্দরবানের লামায় হামলার প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন হিন্দু ব্যবসায়ীরা।


(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)


সূত্র: সমকাল

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ