হিন্দুদের ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিক ফজলুল বারীর ফেসবুক স্ট্যাটাস

হিন্দুদের ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিক ফজলুল বারীর ফেসবুক স্ট্যাটাস

 

"হিন্দুরা কেউ আর বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবী হওয়ার চিন্তা কইরেন না, এমনকি রাজনীতির ধারে কাছেও আইসেন না। পড়াশোনা করেন, ব্যবসা বানিজ্য করেন, বেসরকারি চাকরি করেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো দেশে থাকেন, কাড়ি কাড়ি টাকা কামান ধুমাইয়া খরচ করেন, লাইফ এনজয় করেন। নিজেদের কমিউনিটি তৈরি করেন, সেই কমিউনিটির ইন্টারনাল বন্ডিং স্ট্রং করেন। 


সেই কমিউনিটিতে উন্নতমানের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, মার্কেট, পার্ক, খেলার মাঠ, কমিউনিটি হল, ধর্মীয় স্থাপনা ইত্যাদি তৈরি করেন। মুসলিম তথা প্রথম শ্রেণীর নাগরিকদের কাছ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকেন। পারলে বিদেশে গিয়ে সেটেল্ড হন। 

কারনটা নিচে বলছি---


দেশে এখন মালয়েশিয়ান সিন্ড্রোম দেখা দিয়েছে। কি? বুঝেন নাই তো! তাইনা? আসেন ব্যাপারটা ক্লিয়ার করি।


মাহাথির মোহাম্মদের  মালয়েশিয়ার কথা শুনেন নাই এমন বাংলাদেশীর সংখ্যা কম, হাজার হইলেও মুসলিম দেশ বলে কথা। মালয়েশিয়া নামে মুসলিম দেশ হইলেও সেই দেশের জন্মের সময় মানে #১৯৫৭ সালে সেখানে মালয়দের সংখ্যা ছিল ৫০% এর কাছাকাছি। চাইনিজ এর সংখ্যা ছিল ৪০% এবং ভারতীয়দের সংখ্যা ছিল ৮/৯% এবং বাকি ২/১% অন্যান্য। সেই একই পরিসংখ্যান #২০২৪ সালে এসে হয়েছে মালয় এর সংখ্যা ৬৯% চাইনিজ এর সংখ্যা ২৩% এবং ভারতীয়দের সংখ্যা ৬.৫% এবং বাকি ১.৫% অন্যান্য। কি কোন ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন? বিষয়টা এখনো ধরতে পারেন নাই মনেহয়! আরেকটু ধৈর্য্য ধরেন---


চলেন, প্রথমে জানি মালয়েশিয়ায় মালয়, চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ানদের বর্তমান অবস্থান কী। কার কী কাজ! কে, কী করে। 


#মালয় মুসলিম, এরা হচ্ছে মালয়েশিয়ার ভূমিপুত্র এবং মালয়েশিয়ার মালিক অর্থাৎ প্রথম শ্রেণীর মালয়েশিয়ান। তবে এরা অধিকাংশই অশিক্ষিত, গরিব, ছোটলোক এবং ভয়াবহ মাত্রার রেসিস্ট মুসলিম। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকারি চাকরি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার পুরোটাই এদের হাতে, এবং এটা তারা শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করে।

 প্রবাদ আছে একটা ন্যাংটো মালয় ছেলের ক্ষমতাও মালয়েশিয়ার বড় বড় চাইনিজ/ ইন্ডিয়ান বিজনেস টাইকুনদের চাইতে বেশি। রাষ্ট্রের যাবতীয় ক্ষমতা এবং সুযোগ সুবিধা এরা এককভাবে শুষে নেয়। একটা ইন্টার পাশ মালয় ছেলে পিএইচডি করা চায়নিজ, ইন্ডিয়ানদের চালায় স্রেফ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। আর রাজনীতি?


 সেখানে তো চায়নিজ আর ইন্ডিয়ানদের কোন খাওয়াই নাই! এই যে ভয়াবহ বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় সিস্টেম এবং নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কিন্তু তারা এক দিনে তৈরি করেনি, সিস্টেমেটিক ওয়েতে করেছে। ধীরে ধীরে করেছে। বাংলাদেশে যার শুরুটা সবেমাত্র আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। বাকিটাও দেখবেন অচিরেই!


কী! হতাশ হয়ে গেলেন? এত তাড়াতাড়ি হতাশ হইয়েন না। কিছু পাইতে হইলে কিছু দিতে হয়। মালয়েশিয়ার মুসলিম মালয়রাও দিয়েছে। জিজ্ঞেস করেন কি দিয়েছে? দিয়েছে হচ্ছে, ব্যাবসা বানিজ্য, শিল্প-গবেষণা, দেশের অর্থনীতি। মোদ্দাকথা, মালয়েশিয়ার লাইফলাইন মালয়রা চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ানদের হাতে তুলে দিয়েছে। 


বড় বড় মিল ফ্যাক্টরি, হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, টুরিজম ব্যবসা, মেডিকেল ব্যবসা, এডুকেশন ব্যবসা এইসব কিছুই করে হচ্ছে চায়নিজ এবং ইন্ডিয়ানরা। বিনিময়ে মালয়রা একক রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং সরকারি চাকরিগুলো নিজেরা রেখেছে। সত্যি বলতে কি এত সুবিধা পাওয়ার পরও অশিক্ষিত ছ্যাঁচড়া মালয় মুসলমানরা কাজের জন্যে জীবিকার তাগিদে ঐসব চায়নিজ এবং ইন্ডিয়ানদের কাছে ধরণা দেয়। যোগ্যতা না থাকলে যা হয় আরকি!


শুধু তা-ই নয়, এদের ডেমোগ্রাফিক চেঞ্জের তরিকা দেখলে আপনি অস্থির হয়ে যাবেন। একটা মালয় মুসলিম দম্পতি এভারেজে ৭/৮ টা করে বাচ্চা নেয় স্রেফ মুসলমান জনসংখ্যা বাড়াইতে। একারণেই সেখানে মালয়দের সংখ্যা বেড়েছে বাকিদের কমেছে।


 মূলত ওদের কাছে কোয়ালিটি নয় কোয়ান্টিটির গুরুত্ব বেশি। অবশ্যই সেটা ওদের সরকারি নীতি, ওরা জানে ওদের ছেলেমেয়েদের কোনমতে ইন্টার পাশ করাইতে পারলেই তারা সরকারি চাকরি পাবে। সুতরাং ওদের কোয়ালিটির দরকার নাই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এতো বেশি সুবিধা পাওয়ার কারনে ইদানীং তাদের ইনার ড্রাইভ কমে গেছে এখন নূন্যতম কোয়ালিটিও হয়না। বেশিরভাগই ভ্যাগাবন্ডের মতো ঘুরেফিরে খায়। হ্যাঁ, এটাই হচ্ছে প্রকৃতির প্রতিশোধ।


সুতরাং বাংলাদেশের হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ভাই ও বোনেরা আপনারা হতাশ হইয়েন না। বর্তমান বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সাম্প্রদায়িক মুসলমানেরা যা চাইছে তা তাদের দিয়ে দেন। সরকারি চাকরিজীবী হওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। সরকারি চাকরিই সব না, জীবনে আরও বহু কিছু করার আছে। নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসা-বানিজ্যে নিজেদের নিয়োজিত করেন। অর্থনৈতিক শক্তি হচ্ছে সবচাইতে বড় শক্তি, সেই শক্তি অর্জন করুন। সবার আগে নিজেদের কমিউনিটির লোকদের টেনে তুলুন, মনে রাখবেন রাষ্ট্র আপনাদের সাথে নাই, সুতরাং যা করার সেটা আপনাদেরই করতে হবে।

শুভ ইংরেজি নববর্ষ! ২০২৫!


মহান আল্লাহতায়ালা আপনাদের সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের হাত থেকে রক্ষা করুন।"



সূত্র: ফজলুল বারী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ