মূর্তিপূজা নাকি বেদে নিষেধ। আমরা হিন্দুরা মূর্তিপূজা করি কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিচের কথাগুলো মুসলিম প্রশ্নকারীকে বলা যেতে পারে। শুরু করবেন এভাবে --
কিছু মনে করবেন না ভাই। আমার জানা ভুলও হতে পারে।
আমি যতদূর জানি -
১। আল্লাহ কোরান শরীফে কোথাও মেয়েদের বোরখা-হিজাব পরতে বলেন নাই। শুধু বুকের ওপর কাপড় রাখতে বলেছেন।
২। আল্লাহ কোরান শরীফে এবাদত বা উপাসনা করতে বলেছেন। তবে ‘৫ ওয়াক্ত নামাজ’ পড়তে বলেন নাই।
৩। আল্লাহ কোরান শরীফে কোথাও খৎনা করতে বলেন নাই।
তাহলে আপনারা কেন কোরআন বিরুদ্ধ কাজ করেন?
যদি এর সমর্থনে কোরআনে কোনো আয়াত থাকে তাহলে দয়া করে দেখান। আমার ভুল শুধরে সঠিকটা জেনে নেব।
আমি জানি, হাদিসের মধ্যেও আবার ‘সহিহ্’ এবং ‘সহিহ্ নয়’ এমন বিতর্কের অবকাশ আছে। তাই কোরানের রেফারেন্স জানতে চাই।
আরেকটা কথা, আপনারা যেমন শুধু কোরআন নয়, এর সঙ্গে হাদিসও মেনে চলেন। হিন্দুরাও তেমন শুধু বেদ নয়, এর পাশাপাশি মুনি-ঋষি প্রণীত অন্য শাস্ত্রও মেনে চলেন। অর্থাৎ মূল ধর্মগ্রন্থেই যে সকল বিধান থাকতেই হবে, এর বাইরে আর কোনও বিধান মানা যাবে না - এমন কোনও কথা নেই। তবে অবশ্যই মূল শাস্ত্রের বিধান শিরোধার্য। তার সঙ্গে আপোস চলে না।
আর হ্যাঁ, বেদে বলা হয়েছে, ‘ঈশ্বরের প্রতিমা নেই’ - একথা তো অবশ্যই সত্য। সাত আকাশের ওপর ঈশ্বরের গৃহ আছে, তার সিংহাসন আছে - এমন কিছু তো হিন্দুরা বিশ্বাস করে না। ঈশ্বর নিরাকার এবং সর্বত্রই বিরাজিত - এটা হিন্দুদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও বিশ্বাস। কিন্তু ‘দেবতাদের প্রতিমা নেই’ - একথা তো বেদে বলা হয়নি। বরং দেবতাদের রূপের বর্ণনা ঋগ্বেদে স্পষ্টভাবেই দেওয়া আছে। দেখে নিতে পারেন।
হিন্দুরা দেবতার প্রতিমা বানায়, ঈশ্বরের নয়। সর্বশক্তিমান, এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের একেকটি শক্তির প্রকাশ হলো দেবতা। আর প্রতিমাতে দেবতার পূজা অর্থাৎ আপনাদের ভাষায় ‘মূর্তিপূজা’ করতে আমাদের বেদ-এ নিষেধ নেই। যদি বেদ-এ মূর্তিপূজা নিষেধের রেফারেন্স আপনার কাছে থাকে তাহলে দয়া করে দেখাবেন। আমি কথা দিচ্ছি, মূর্তিপূজা ছেড়ে দেব। আর যদি দেখাতে না পারেন, দয়া করে এভাবে আর নিজের মূর্খতার পরিচয় দেবেন না। একটু বোঝার চেষ্টা করলে ভ্রান্তিটা দূর হবে আশা করি। আমাদের সৌভ্রাতৃত্ব অটুট থাকুক। ওঁ শান্তিঃ।
* ছোট ভাই মানিক রক্ষিতের দেয়াল থেকে নেয়া। নিজে পড়ুন, অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
0 মন্তব্যসমূহ