পুণ্ডরীক ধামে ফরহাদ মজহার

চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরে ফরহাদ মজহার।
চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরে ফরহাদ মজহার।

পুণ্ডরীক ধামে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবস্থান করে মন্দিরের অধ্যক্ষসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম ব্যুরো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 19 Nov 2024, 12:37 AM


চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধাম মন্দির পরিদর্শন করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।


সোমবার দুপুরে তিনি হাটাহাজারি উপজেলার মেখলে পুণ্ডরীক ধামে যান; বেশ কিছু সময় সেখানে অবস্থান করে মন্দিরের অধ্যক্ষসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন।


পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফরহাদ মজহার ঐতিহাসিক স্থান পুণ্ডরীক ধাম পরিদর্শন করেন। প্রায় ৩ ঘণ্টা অবস্থান করেন।


“আমাদের মধ্যে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কীভাবে আগানো যায়, তা নিয়ে পারস্পরিক আলাপ আলোচনা হয়েছে।”


পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে আলিঙ্গন করছেন ফরহাদ মাজহার
পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে আলিঙ্গন করছেন ফরহাদ মাজহার


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পালি বিভাগের শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী বলেন, “সাম্প্রতিক সনাতনী সম্প্রদায়ের আন্দোলন এবং কী বলতে চাই, সেটা জানতে চেয়েছিলেন ফরহাদ মজহার।


“ফরহাদ মজহার বাংলার সহজিয়া সংষ্কৃতি নিয়ে কাজ করেন। যার কারণে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, বাঙালি হিন্দু-মুসলমানদের সাংস্কৃতিক দূরত্ব কীভাবে ঘোচানো যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন এবং পরামর্শ শুনেছেন।”


ফরহাদ মজহার সনাতনী সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ‘একাত্মতা প্রকাশ করেছেন’ জানিয়ে চবি কুশল বরণ বলেন, 


“তিনি নিজেই কয়েকটা দাবির বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ করার বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।”


পুণ্ডরীক ধামের অন্যান্য সন্ন্যাসীদের সাথে ফরহাদ মাজহার
পুণ্ডরীক ধামের অন্যান্য সন্ন্যাসীদের সাথে ফরহাদ মাজহার


গত ৩০ অক্টোবর সাধুসন্তু ও সনাতনী সংগঠকদের বিরুদ্ধে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার এবং ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারী গলির ঘটনাটিও ফরহাদ মজহারকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী।


সূত্র: বিডিনিউজ২৪


-0-0-0-0-0-0-0-


উল্লেখ্য যে ৮ই নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ফরহাদ মজহার তার ফেসবুক পোস্টে পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী, ইসকন এবং বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু জনগোষ্ঠী সম্পর্কে অমার্জিত অশালীন ষড়যন্ত্রমূলক মন্তব্য করেছিলেন। তার সেই ফেসবুক পোস্টে যা লেখা ছিল তা নিচে উল্লেখ করা হল।


ফরহাদ মজহারের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনসট
ফরহাদ মজহারের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনসট


Farhad Mazhar

8 Nov


দুর্বল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে উৎখাত করা এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কিম্বা আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্যই ইসকনের সাম্প্রতিক মারমুখী রূপ আমরা দেখছি। হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসী সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিশাবে ইসকনের শক্তিশালী ভিত্তি বাংলাদেশে উৎখাত হয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সরকারই করে দিয়ে গেছে। এই পোস্টে ভোলায় তোফায়েল আহমেদের ভূমিকা নিয়ে লেখা আমার আগের একট পোস্ট দেখুন।


অতএব নিশ্চিত থাকুন ইসকনের হঠাৎ তৎপরতা নতুন কিছু নয়, অত্যন্ত পরিকল্পিত। সনাতন ধর্মাবলম্বিদের এই ক্ষেত্রে স্রেফ ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসকনের ঝাণ্ডার নীচে একত্রিত হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ। পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে ক্ষমতাচ্যূত আওয়ামী লীগ। অবাক হব না যদি এর পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত সরিয়ে নির্বাচন দেবার জন্য উন্মাদ হয়ে যাওয়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ইন্ধন থাকে।


হুঁশিয়ার থাকুন। ইসকনের মুখোশ পরা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে রুখে দিন।


আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিশাবে ইসকন সম্পর্কে বাঙালি ও বাংলাভাষীদের ঘোর আপত্তি রয়েছে। ইসকনের বিরুদ্ধে আপত্তি শুধু বাংলাদেশের নয়, এই আপত্তি সীমান্তের ওপারের বাঙালিদের যেমন, তেমনি সারা দুনিয়ার বাঙালি ও বাংলাভাষীদেরও রয়েছে। ইসকন বড় বাংলা ও বাংলাভাষীদের ভাবের ঐশ্বর্য, দর্শন, সমাজ ও রাজনৈতিক চিন্তার শক্তিকে বিকৃত ও বিনাশ করতে চায়। তাই তারা রাধাকৃষ্ণ যুগল নামের মাধুর্যের আনন্দ চায় না, যেখানে মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেমের ফল্গু ধারা নিত্য প্রবাহিত। তারা হিন্দুত্ববাদী 'জয় শ্রীরাম' রণধ্বনী দিয়ে বাংলাদেশে ইসলাম নির্মূল করতে চায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ