"বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" - ডাউনলোড করুন

"বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" - ১ম পাতা
"বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" - ১ম পাতা


"বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" - ২য় পাতা
"বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" - ২য় পাতা


"ফিরে এসো অমৃতে, জ্ঞানের নৌকায় চড়ে

ধর্মকে জানবো মোরা, বৈদিক শাস্ত্র পড়ে" - 🕉️ 


এই প্রতিপাদ্যকে সম্মুখে রেখে বৈদিক অমৃত জ্ঞান প্রচারে নিয়োজিত VEDA পেজ "বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেট" প্রস্তুত করেছে। সকল সনাতনী যেন খুব সহজেই, সনাতনধর্ম শাস্ত্রের প্রাথমিক কিছু জ্ঞান আহরণ করে সমৃদ্ধ হতে পারে সেই উদ্দেশ্য এই লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। পাঠ করে যদি ভাল লাগে তাহলে আপনিও লিফলেট এর ইমেজ কপি দুইটি ডাউনলোড করে নিন। অথবা সম্পূর্ণ টেক্সট ডাউনলোড করে নিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রিন্ট করে বিতরণ করতে পারেন।

# পোস্ট লিংক


++++++++++++

বৈদিক প্রশ্নোত্তর লিফলেটের সম্পূর্ণ টেক্সট। এই লেখাগুলো কপি করে নিয়ে কম্পিউটারে সাজিয়ে প্রিন্ট করে নিন। প্রিন্ট করা কাগজ ফটোকপি করে জনে জনে বিতরণ করুন। (টেক্টে কোন ভুল থাকলে ইমেজ কপিদুটি প্রামাণ্য হিসেবে বিবেচ্য হবে।)

++++++++++++


বৈদিক প্রশ্নোত্তর ভূমিকা


ধর্মই সনাতন, সনাতনই ধর্ম। পরমাত্মাই এই ধর্মের সৃষ্টিকর্তা। সনাতনধর্ম দিব্য ও সত্য। সেই পরমসত্যকে জেনে মনুষ্য অমৃত অর্জনের প্রয়াস করে। সেই সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব, লক্ষণ, শাস্ত্র জিজ্ঞাসা জানা প্রত্যেক এর মনুষ্যের কর্তব্য। সেজন্য, নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর সমূহ অধ্যয়ন ও প্রচার এর জন্য আত্মনিয়োগ করি ।


প্রশ্ন: আমাদের ধর্মকে সনাতন বলা হয় কেন?

উত্তর: ধর্ম মাত্রই সনাতন বা চিরন্তন। অর্থাৎ, যা ছিল আছে থাকবে। যার শুরু নেই বা বিনাশ নেই। যা পরিবর্তন করা যায় না। তাহাই সনাতন বা চিরন্তন। সেজন্য, ধর্মকে সনাতন বলা হয়েছে। "প্রিয়ং চ নানৃতং ব্রুয়াদেষ ধৰ্ম্মঃ সনাতনঃ" ।। - মনুস্মৃতি ৪/১৩৮ অর্থাৎ, অপরের হিতকর প্রিয় সত্য কথা বলিবে, অপ্রিয় সত্য কথা কখনো বলিবে না যাহা লোকের মর্মভেদ করে, অপরকে প্রসন্ন করার নিমিত্তেও আবার মিথ্যা বলিবে না, ইহাই বেদবিহিত সনাতন ধর্ম । 


প্রশ্ন: ধর্মের লক্ষণ কয়টি ও কি কি?

উত্তর: ধর্মের লক্ষণ ১০টি। যথা:- সহিষ্ণুতা, ক্ষমা, চুরি না করা, শুচিতা, ইন্দ্রিয়সংযম, শুদ্ধ, বুদ্ধি, জ্ঞান, সত্য এবং ক্রোধহীনতা। -মনুসংহিতা, ৬/৯২ 


প্রশ্ন: ধর্মের সাথে রিলিজিয়ন এর পার্থক্য কি?

উত্তর: সংস্কৃত শব্দ ধৃ ধাতু হতে ধর্ম শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ ধারণ করা। যার দ্বারা পদার্থ সমূহের যথাযথ জ্ঞান ও তার প্রয়োগ দ্বাওয়া উন্নতি সিদ্ধ হয় তাই ধর্ম - বৈশেষিক দর্শন ১/১/২। Religion নির্দিষ্ট কিছু আচার অনুষ্ঠান নিয়ম কানুনের সমষ্টিগত সাংস্কৃতিক, ভৌগলিক ও রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা জীবনব্যবস্থা।


প্রশ্ন: বেদে নারী মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিকা কত জন?

উত্তর: বেদের মোট নারী ঋষিকা ৩৩ জন, মোট ৩৫ টি সুক্ত নারী ঋষিগণের নিকট প্রেরিত হয়েছে। এর মধ্যে ঋষি অদিতি এবং ঋষি যমি দুটি করে সুক্তদ্রষ্টা, বাকী সবাই একটি করে।


প্রশ্ন: চতুর্বেদ এর মন্ত্র সংখ্যা কয়টি?

উত্তর: চতুর্বেদ এর মোট মন্ত্রসংখ্যা ২০৩৭৯। ঋগ্বেদ ১০৫৫২, যজুর্বেদ ১৯৭৫, সামবেদ ১৮৭৫, অথর্ববেদ ৫৯৭৭ 


প্রশ্ন: মনুস্মৃতিতে ধর্মের মূল বলা হয়েছে কোন গ্রন্থকে?

উত্তর: মনুস্মৃতির ২য় অধ্যায়ের ৬ষ্ঠ শ্লোকে বলা হয়েছে, "বেদোখিলো ধর্মমূলম্” । মনুসংহিতা ২/৬ অর্থাৎ, বেদ হল ধর্মের মূল৷ ধর্মের বিষয়ে বেদই স্বতঃ প্রমাণ ।


প্রশ্ন: বৈদিক উপনিষদ কয়টি ও কি কি?

উত্তর: মূখ্য বা বৈদিক উপনিষদ ১১টি। ঈশোপনিষদ, কেনোপনিষদ, প্রশ্নোপনিষদ, মাণ্ডুক্য উপনিষদ, মুণ্ডক উপনিষদ, ঐতরেয় উপনিষদ, তৈত্তিরীয় উপনিষদ, কঠোপনিষদ ছান্দোগ্য উপনিষদ, বৃহদারণ্যক উপনিষদ, শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ


প্রশ্ন: ষড়দর্শন কি কি?

উত্তর: ভারতীয় দর্শন এ বেদবিহিত ০৬টি দর্শন শাস্ত্র রয়েছে। যেগুলো একত্রে ষড়দর্শন নামে পরিচিত। 

১. সাংখ্য দর্শন । ২.যোগ দর্শন। ৩. ন্যায় দর্শন । ৪. বৈশেষিক দর্শন। ৫. মীমাংসা দর্শন। ৬. বেদান্ত দর্শন ।


প্রশ্ন: ত্রৈতবাদ কী এবং অনাদি সত্তা সমূহ কি কি?

উত্তর: ত্রৈতবাদ হচ্ছে বেদভিত্তিক একটি দর্শন । এই দর্শন অনুসারে পরমাত্মা, জীবাত্মা এবং প্রকৃতি- এই তিনটি সত্তা অনাদি, নিত্য ও পৃথক। ত্রৈতবাদ অনুসারে, অনাদি সত্তা ০৩ টি। যথা:- 

১. ঈশ্বর (নিমিত্ত কারণ) ২. প্রকৃতি (উপাদান কারণ) ৩. জীবাত্মা (সাধারণ কারণ)


প্রশ্ন: শ্রীমদ্ভগবদগীতার কি গ্রন্থ এবং এর অপর নাম কি?

উত্তর: স্মৃতি প্রস্থান এবং সপ্তশতী ।


প্রশ্ন: বেদকে প্রথম কে চারভাগে বিভক্ত করেন?

উত্তর: পবিত্র বেদ পরমাত্মার মতই সনাতন । প্রথম থেকে বেদ চারভাগে বিভক্ত। যার স্পষ্ট উল্লেখ ঋগ্বেদ ১০/৯০/৯, যজুবেদ ৩২/৭, অথর্ববেদ ১০/৭/২০ মন্ত্র, শতপথ ব্রাহ্মণ ১৪/৫/৪/১০ এবং গোপথ ব্রাহ্মণ ১/১/১৯ তথা ৩/১, মুণ্ডকোপনিষদ ১/১/৫ সমূহে রয়েছে।


প্রশ্ন: কোন পাশ্চাত্য দার্শনিক উপনিষদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন?

উত্তর: শোপেনহাওয়ার ।


প্রশ্ন: পুরুষার্থ কয়টি এবং মূখ্য ও গৌণ পুরুষার্থ কি কি?

উত্তর: পুরুষার্থ ০৪টি, যথা: ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ। মূখ্য:- ধর্ম-মোক্ষ গৌণ:- অর্থ-কাম।


প্রশ্ন: পরমাত্মার সর্বশ্রেষ্ঠ নাম কি?

উত্তর: পরমাত্মার সর্বশ্রেষ্ঠ নাম ও৩ম্। [যজুর্বেদ ৪০/১৭] 


প্রশ্ন: পঞ্চমহাযজ্ঞ কি?

উত্তর: পবিত্র বেদ অনুসারে প্রত্যেক মনুষ্যের ০৫টি মহাযজ্ঞের বিধান রয়েছে। সে পঞ্চমহাযজ্ঞ গুলো হলো: 

১. ব্রহ্মযজ্ঞ ২. দেবযজ্ঞ ৩. পিতৃযজ্ঞ ৪. নৃযজ্ঞ ৫. অতিথি যজ্ঞ।


প্রশ্ন: ষোড়শ সংস্কার কি?

উত্তর: প্রত্যেক মনুষ্যের গর্ভধারণ থেকে শ্মশান পর্যন্ত ১৬টি বৈদিক সংস্কার রয়েছে । মহর্ষি মনু বেদ অনুসারে এই ১৬ সংস্কার নির্দেশিত বলেছেন [মনুস্মৃতি ২।১৬][যজুর্বেদ ৮।৩৩]। এগুলোকে একত্রে ষোড়শ সংস্কার বলা হয় ।

১. গর্ভাধান২.পুংসবন৩. সীমান্তোন্নয়ন ৪. জাতকর্ম ৫. নামকরণ ৬. নিষ্ক্রমণ ৭. অন্নপ্রাশন ৮. চূড়াকর্ম ৯. কর্ণবেধ ১০.উপনয়ন ১১. বেদারম্ভ ১২. সমাবর্তন ১৩. বিবাহ ১৪. বানপ্রস্থ ১৫. সন্ন্যাস ১৬. অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া


প্রশ্ন: বেদে সমগ্র বিশ্ববাসীকে কি হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে?

উত্তর: বিশ্বের সকল মানবকে বেদে অমৃতের সন্তান হিসেবে সম্বোধিত করা হয়েছে । "শৃণ্বন্ত বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা" - যজুর্বেদ ১১/৫ অর্থাৎ, মনুষ্য সকলেই অমৃতের সন্তান।


প্রশ্ন: বর্ণাশ্রম কি?

উত্তর: মনুষ্য নিজের ইচ্ছায় যে ব্রত বা কর্ম পছন্দ করে বেছে নেয়া হয় তাই বর্ণ । বর্ণ ০৪টি, যথা:- ১. ব্রাহ্মণ ২. ক্ষত্রিয় ৩. বৈশ্য ৪. শুদ্র । বর্ণ জন্ম অনুসারে নয় বরং কর্ম অনুসারে নির্ধারিত হয় । শ্রীমদভগবদ্গীতা ৪/১৩ বলা হয়েছে, "চাতুর্বর্ণং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ" অর্থাৎ, গুণ ও কর্মের অনুসারেই চার বর্ণের শ্রেণীবিভাগ হয়েছে । 


প্রশ্ন: চতুরাশ্রম কয়টি ও কি কি?

উত্তর: চতুরাশ্রম ০৪টি। ১. ব্রহ্মচর্য ২. গার্হস্থ্য ৩. বানপ্রস্থ ৪. সন্ন্যাস।


প্রশ্ন: ত্রিবিধ দুঃখ কি?

উত্তর: দর্শন শাস্ত্র অনুসারে ত্রিবিধ দুঃখ বলতে মনুষ্য এ জগৎে বিবিধ সুখ ও দুঃখ ভোগ করে থাকে। এবং সে দুঃখ থেকে নিবৃত্তি হলো মোক্ষ। সাংখ্য দর্শনে যে ত্রিবিধ দুঃখ হতে নিবৃত্তির উল্লেখ রয়েছে তা সনাতন শাস্ত্র অনুসারে হলো, 

১. আধ্যাত্মিক দুঃখ । ২.আধিভৌতিক দুঃখ। ৩. আধিদৌবিক দুঃখ


প্রশ্ন: সনাতন শাস্ত্র অনুসারে বিবাহ কত প্রকার ও কি কি?

উত্তর: সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিবাহ ০৮ প্রকারঃ আট প্রকারের বিবাহ:- 

• প্রথম ব্রাহ্ম • দ্বিতীয় দৈব • তৃতীয় আর্য • চতুর্থ প্রাজাপত্য পঞ্চম অসুর, • ষষ্ঠ গান্ধর্ব • সপ্তম রাক্ষস • অষ্টম পৈশাচ

-০-


"ফিরে এসো অমৃতে, জ্ঞানের নৌকায় চড়ে ধর্মকে জানবো মোরা, বৈদিক শাস্ত্র পড়ে"


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ