জনৈক ওয়াজেদ আলি (Oajed Ali) আমাকে উপদেশ দিয়েছেন,
"সারাদিন হিন্দু-মুসলিম করে বেড়াচ্ছেন! যদি একটু মানুষের জন্য ভাবতেন তাহলে জীবনটা সার্থকতা পেতো"।
আমার উত্তরঃ
আমি আগে শুধু মানুষের কথাই ভাবতাম। হিন্দু মুসলমান আলাদা করে ভাবতাম না। তারপর মুসলমানদের ডিসিপ্লিন, একতা ও ধর্মভক্তি দেখে মুগ্ধ হয়ে আমি কোরান পড়া শুরু করলাম। সেই মহান গ্রন্থ পড়ে আমি বুঝতে পারলাম যে দুনিয়ায় মানুষ বলে কিছু নেই। হাত পা থাকলেই মানুষ হয় না। প্রকৃত মানুষ হতে গেলে মোমিন (মুসলমান) হতে হয়।
মহান আল্লাতালা বলেছেন - মানুষের মধ্যে দুটি ভাগ আছে। মোমিন আর কাফের। মোমিনরা হল আল্লার আশীর্বাদ প্রাপ্ত। আর কাফেররা হল আল্লার দ্বারা অভিশপ্ত। তাদের দোষ কী? তারা মহান আল্লাতালা কে বিশ্বাস না করে অন্য মিথ্যা দেব-দেবী কে বিশ্বাস করে ও পূজা করে। এ মহাপাপ। এজন্য তাদেরকে অনন্ত কাল নরকের আগুনে পুড়ে মরতে হবে। একটু ভুল হয়ে গেল। মরে তো আগেই গেছে। মৃত্যুর পর অনন্ত কাল নরকের আগুনে পুড়ে যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। গায়ের চামড়া পুড়ে গেলে মহান করুণাময় আল্লাতালা আবার ওই কাফেরের নতুন চামড়া গজিয়ে দেবেন। সেই চামড়া আবার পুড়বে। পুড়তেই থাকবে, পুড়তেই থাকবে। আর কাফের যন্ত্রণা পেতেই থাকবে। আর আফশোস করবে যে জীবিত কালে কেন আল্লার উপর বিশ্বাস স্থাপন করে মোমিন হইনি ! তাহলে তো এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হত না। কিন্তু তখন আর ভুল শোধরানোর কোনো উপায় নেই। অনন্তকাল পুড়তেই হবে।
আর আল্লায় পরম বিশ্বাসী মোমিন - সে তো মৃত্যুর পর বেহেস্তে মানে জন্নতে মানে স্বর্গে যাবে। সেখানে তার জন্য থাকবে ঠান্ডা জল, অনেক দামী দামী ফল, দামী পানীয়, আর ১৬ বছর বয়সের আয়ত চক্ষু নবযৌবনা হুরী। এসব তার ভোগের জন্য থাকবে। আল্লাতালায় বিশ্বাসের পুরস্কার স্বরূপ।
তাহলে এই মোমিন আর অভিশপ্ত কাফের কে একই রকম দৃষ্টিতে দেখা যায় কি ? পবিত্র গ্রন্থ কোরান পড়ে আমার এই জ্ঞান হয়েছে।
এই জ্ঞান হওয়ার আগে আমি সবাইকে একই দৃষ্টিতে মানুষ হিসাবে দেখতাম। কিন্তু কোরান পড়ার পর এখন মানুষ দেখলেই আমার প্রথম মনে হয়, এই ব্যাক্তিটা মোমিন না কাফের? পবিত্র কোরানের শিক্ষা।
তাই আমি ওয়াজেদ আলী কে স্পষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করতে চাই, তিনি মোমিন না কাফের? কোরানের শিক্ষা থেকে আমি জানি যে আমি কাফের। ওয়াজেদ আলীও যদি আমার মত কাফের হন, তাহলে আমি তাকে নিজের বলে ভাবতে পারব। কিন্তু উনি যদি মোমিন হন, তাহলে উনি তো আমাকে সবসময় অভিশপ্ত কাফের ভাবেন। সেক্ষেত্রে আমি ওনাকে কি করে নিজের ভাবব?
সংকলনে :- শুভঙ্কর নাগ
কলমে :- পথপ্রদর্শক মাননীয় তপন ঘোষ।
(১৯শে মে ২০১৮)
1 মন্তব্যসমূহ
খুব সত্যি কথা। এভাবেই সচেতনতা বাড়ুক সনাতনীদের মধ্যে।
উত্তরমুছুন