ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, গোলাপগঞ্জে স্কুলশিক্ষক আত্মগোপনে
সিলেট ব্যুরো, প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২২ । ২৩:০৫ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২২ । ২৩:৩০
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আসার পর তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন।
ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ১৫ মার্চ অভিযোগ করেন, কলেজ অধ্যক্ষ সুনীল দাস ক্লাসে অক্সিজেনের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য এক ছাত্রীর নেকাব খুলতে বলেন। ওই ঘটনা ছাত্রী বাড়ি ফিরে বাবা-মাকে জানালে তারা ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনেন।
এতে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালে ওই শিক্ষক ছাত্রীর বাড়িতে যান। ছাত্রীর বাবার কাছে দুঃখপ্রকাশ করলে ঘটনাটি মিটমাট হয়। ছাত্রীর বাবা তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ‘মেয়ের হিজাব খোলার বিষয় আদৌ সত্য নয়।'
কিন্তু ওই ক্লাসের আরেক ছাত্রী ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে অধ্যক্ষ সুনীল দাসের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত রোববার ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গর্ভনিং বডি গঠিত তদন্ত কমিটি এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দেয়। একই দিন উপজেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটিও কাজ শুরু করে।
গত ২০ মার্চ এলাকাবাসীকে নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে সভা ডাকেন স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শামীম আহমদ। সভায় কিছু লোক অধ্যক্ষের শাস্তি দাবি করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আতঙ্কে পরিবার নিয়ে সুনীল দাস এলাকা ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
তবে প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলছেন, ঘটনাটি নিয়ে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। অধ্যক্ষের সঙ্গে ছাত্রীর বাসায় যাওয়া একজন শিক্ষক বলেন, এখানে রাজনীতি হচ্ছে।
এদিকে গভর্নিং বডি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শামীম আহমদ বলেন,
'ফেসবুকে সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে ঘটনাকে বড় করা হয়েছে। এখন বিষয়টি তদন্ত করা হবে।'
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অতীতে কোনো অভিযোগ ছিল না উল্লেখ করে গভর্নিং বডির সভাপতি মাসুম চৌধুরী জানান, ঢাকায় থাকায় তিনি তদন্ত রিপোর্ট দেখেননি। ফিরে সিদ্ধান্ত নেবেন। উপজেলা প্রশাসন তদন্ত করায় তাদের রিপোর্টের জন্যও অপেক্ষা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র: সমকাল
0 মন্তব্যসমূহ